বন্দরকে দুই ভাগের সিদ্ধান্তে এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিবাদ, নাগরিক সংলাপে স্পষ্ট বার্তা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Locals of Narayanganj-5 strongly protested the Election Commission's proposal to divide the Bandar Thana area. In a citizens' dialogue held at Nabiganj, residents warned of increased complic..

নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকাকে দুটি সংসদীয় আসনে বিভক্ত করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও নাগরিক সমাজ। শনিবার বিকেলে বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ‘আমরা বন্দরবাসী’ নামের সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক নাগরিক সংলাপে এই প্রতিবাদ উঠে আসে। সংলাপে বক্তারা এই পরিকল্পনাকে 'ভুল সিদ্ধান্ত' উল্লেখ করে বলেন, এতে শুধু প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলাই নয়, জনগণের ভোগান্তি বহুগুণে বাড়বে।

নির্বাচন কমিশনের কারিগরি বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের বর্তমান কাঠামোতে পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন গঠিত হবে শুধুমাত্র সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে। অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত করা হবে বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন, যা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৫ এর অন্তর্গত।

এই পুনর্বিন্যাসের ফলে বন্দর থানা এলাকাটি দুটি আলাদা সংসদীয় আসনের অন্তর্ভুক্ত হবে—একই থানার আওতায় দুইজন সংসদ সদস্য। এই বিষয়টিকেই মূলত অযৌক্তিক ও জনবিরোধী বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, ‘একই থানা এলাকায় দুই এমপি থাকলে প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজ জটিল হয়ে উঠবে। কেউ কারো দায়িত্ব নিবে না, কেউ কাউকে মানবে না।’

নাগরিক সংলাপে সভাপতিত্ব করেন গোলাম সারোয়ার সাইদ। সেখানে বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা, বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি আতাউর রহমান, আনোয়ার হোসেন, মোঃ রাসেল মেম্বার, মনজুরুল আলম এবং সামসুন নাহার ময়না।

সাবেক এমপি আবুল কালাম বলেন, “বন্দর একটি ঐতিহাসিক ও প্রশাসনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এটিকে এভাবে ভাগ করার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। একদিকে নির্বাচন এলাকা বিভক্ত হবে, অন্যদিকে জনসাধারণের সাথে জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্ক দুর্বল হয়ে যাবে।”

বক্তারা জানান, এলাকাবাসীর সম্মতি ছাড়া এ ধরনের বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নেই কারও। প্রয়োজনে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে কিংবা মানববন্ধনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

একই সাথে তাঁরা জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগে লিখিত আপত্তি জানানো হবে। বক্তারা বলেন, “আমরা কেউ বিভক্তি চাই না, চাই ঐক্য। বন্দরকে এক রেখেই সুষ্ঠু রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখাই হবে সকলের মঙ্গল।”

এ বিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক, ক্ষোভ এবং আশঙ্কা—তিনটি অনুভবই প্রবল। অনেকেই মনে করছেন, প্রশাসনিক জটিলতা এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বাড়বে। নাগরিক সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা একক কণ্ঠে দাবি তোলেন, "বন্দরকে ভাগ করা চলবে না—এই সিদ্ধান্ত আমরা মানি না।"

No se encontraron comentarios