close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বন্দরে ছয় মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Workers of Abdul Monem Limited’s Central Workshop in Narayanganj blocked the Dhaka-Chattogram highway demanding six months of unpaid wages. The blockade was withdrawn after police assured payment with..

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বকেয়া বেতনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠলেন শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে আব্দুল মোনেম লিমিটেডের সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপের শতাধিক শ্রমিক ছয় মাসের জমে থাকা বেতন পরিশোধের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় কর্মীদের হাতে ব্যানার ও লাঠি-সোটা না থাকলেও, তাদের ক্ষোভ আর হতাশা যেন মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।

শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘ ছয় মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তারা। অনেকেই দুধ-ডিম কিনে খাওয়ার সামর্থ্য হারিয়েছেন, সন্তানের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অথচ প্রতি মাসেই কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়ে আসছিল যে শিগগিরই বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও বেতন পাননি তারা।

ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, “মানুষের ঘরে ভাত নেই, ঋণের বোঝা মাথায়, অথচ কর্তৃপক্ষ শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না।” অবশেষে নিরুপায় হয়ে ওয়ার্কশপের ভেতর থেকে একটি ক্রেন বের করে মহাসড়কের মাঝখানে বসিয়ে রাখেন তারা। এতে করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশেই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মহাসড়কে আটকে পড়েন হাজারো যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ি।

খবর পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে। পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের জানানো হয়, কোম্পানির কর্তৃপক্ষ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে প্রায় দুই ঘণ্টা পর শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন এবং মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ওয়ার্কশপের ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, শ্রমিকদের ক্ষোভ যৌক্তিক। কিছু আর্থিক জটিলতার কারণে বেতন প্রদানে দেরি হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে এক সপ্তাহের মধ্যে সব শ্রমিক তাদের পাওনা বুঝে পান।

এ বিষয়ে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াতক আলী বলেন, “শ্রমিকরা ছয় মাস ধরে বকেয়া বেতন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিই এবং কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিই। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক।”

শ্রমিকরা অবশ্য সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি বেতন পরিশোধ না করা হয়, তবে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আমাদের রক্ত-ঘামের মজুরি নিয়ে খেলাধুলা করা হলে এবার শুধু অবরোধ নয়, আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

এই ঘটনায় শ্রমিকদের দৈনন্দিন জীবনের করুণ বাস্তবতা আবারও সামনে এলো। যেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে প্রতিদিন, সেখানে মাসের পর মাস বেতন ছাড়া দিন পার করা যেন এক অমানবিক পরিস্থিতি। সমাজের এক শ্রেণি যখন বিলাসে মগ্ন, তখন দেশের একাংশ শ্রমজীবী মানুষ জীবনযুদ্ধের দুঃসহ অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়াচ্ছেন।

No comments found