বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ২০ শতাংশে উন্নীত করতে সরকার সুপরিকল্পিত কর্মসূচি গ্রহণ করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। শনিবার রাজধানীর বন ভবনে বন বিভাগের উন্নয়ন বিষয়ক এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "বনভূমি বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের নদীর জেগে ওঠা নতুন চর, উপকূলীয় এলাকা এবং পতিত জমিতে বনভূমি সৃষ্টির পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে বন কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।" তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বনভূমি বৃদ্ধির পাশাপাশি বনাঞ্চল সুরক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হবে।
সভায় আরও জানানো হয় যে, বন বিভাগের কার্যক্রমকে স্বচ্ছ ও ফলপ্রসূ করতে ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা হবে। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্মচারীরা বিধিমোতাবেক বনের উন্নয়নমূলক কাজে নিয়োজিত থাকতে পারবেন।
বিপন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের অংশ হিসেবে 'এলিফ্যান্ট করিডর রেস্টোরেশন' কার্যক্রম হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এবং ক্যাপটিভ হাতির জন্য বিশেষ অরফানেজ স্থাপন করা হবে। এছাড়া মধুপুর এলাকায় কমিউনিটি ট্যুরিজমের সুযোগ সৃষ্টি করে স্থানীয় জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য প্রতি ভালোবাসা জাগাতে রাজধানীর পূর্বাচলে একটি অত্যাধুনিক নেচার লার্নিং সেন্টার স্থাপন করা হবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "আমাদের বন শুধু গাছের সমষ্টি নয়, এটি আমাদের জীবনের রক্ষাকবচ। বনভূমি বৃদ্ধি ও সংরক্ষণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।"
সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, যুগ্মসচিব (বন) শামিমা বেগম, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয় ও বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।