রাজধানী ঢাকার উত্তরা এলাকায় ঘটল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা—বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে, যখন বিমানটি প্রশিক্ষণের জন্য আকাশে ওড়ার কিছু সময় পরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়ে।
ঘটনার পরপরই এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আকাশে দেখা যায় ধোঁয়ার ঘন কুন্ডলী, চারপাশে ছুটোছুটি শুরু করে দেন স্থানীয়রা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা গেছে অন্তত ৮-১০ জনকে স্ট্রেচারে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ভিডিওতে বিস্ফোরণোত্তর অগ্নিকাণ্ড ও ধোঁয়ার দৃশ্যও ধরা পড়ে, যদিও এসব ভিডিওর সত্যতা এখনও সরকারি সূত্রে যাচাই হয়নি।
উদ্ধারে প্রাণপণ প্রচেষ্টা:
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) কাজী নজমুজ্জামান জানান—"এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না ঠিক কতজন হতাহত হয়েছেন, তবে সংখ্যা উল্লেখযোগ্য এবং অনেককে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।"
উদ্ধারে সহায়তা দিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দুইটি প্লাটুনও যোগ দিয়েছে, যাতে দ্রুততার সঙ্গে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয়। বেশ কয়েকজন আহতকে হেলিকপ্টারে করে সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল)-এ স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আইএসপিআর নিশ্চিত করেছে ঘটনাটি:
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, "বিমানটি একটি নিয়মিত প্রশিক্ষণ মিশনে অংশ নিচ্ছিল এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।"
তবে ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে এবং মিডিয়া ও সাধারণ জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে।
স্থানীয়দের আতঙ্ক ও প্রতিক্রিয়া:
ঘটনাস্থলের পাশেই অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দেয়। অনেকে ছুটে আসেন সন্তানদের খোঁজ নিতে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার স্বার্থে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী রফিকুল ইসলাম বলেন, “একটা বিকট শব্দ শুনি। তারপর দেখি একটা বিশাল আগুন, ধোঁয়া... মানুষ ছুটোছুটি করছে। এমন দৃশ্য জীবনে দেখিনি।”