বিএসএফের গুলিতে নিহত ইব্রাহীমের বাড়িতে নাহিদ ইসলাম ও সারজিস, পরিবারকে আশ্বাস দিলেন বিচার পাওয়ার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
NCP leaders visited the family of Ibrahim Hossain, a Bangladeshi farmer killed by BSF gunfire. They vowed that his death won't be in vain and promised to raise the issue at the highest level.

বিএসএফের গুলিতে নিহত নিরীহ কৃষক ইব্রাহীম হোসেনের বাড়িতে ছুটে গেলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলছেন—ইব্রাহীমের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না, এই মৃত্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কথাও বলবে দল।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঝাডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত ইব্রাহীম হোসেনের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ছুটে গেলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র কেন্দ্রীয় নেতারা। গত বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে নেতারা নিহতের গ্রামের বাড়ি ঝাঝাডাঙ্গা মাঝেরপাড়ায় যান, শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন, কবর জিয়ারত করেন এবং সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।

এ সময় প্রতিনিধি দলে ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তর অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, এবং নেত্রী নুসরাত তাবাসসুমসহ আরও অনেকে।

নেতারা নিহত ইব্রাহীমের বাবা নুর ইসলাম, মা হাজেরা বেগম, স্ত্রী সাহিনা বেগম ও তিন বছরের কন্যা আয়েশা খাতুনের পাশে বসে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। পরিবারের সদস্যরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তাদের সন্তান, স্বামী, বাবাকে তারা হারিয়েছেন সীমান্তের অবিচারের কারণে। কেউ যেন আর এমনভাবে প্রিয়জন হারাতে না হয়—এই দাবি জানান তারা।

এ সময় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “বিএসএফের গুলিতে একজন নিরীহ বাংলাদেশি কৃষকের মৃত্যু আমরা মেনে নেব না। ইব্রাহীম হোসেনের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আমরা আন্তর্জাতিক ফোরাম পর্যন্ত এই ইস্যু তুলব, যেন এমন মৃত্যু আর না ঘটে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে সরকারকেই জবাবদিহি করতে হবে। আমরা জনগণের পক্ষ থেকে এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে যাব।”

পরবর্তীতে নেতারা নিহতের কবর জিয়ারত করেন এবং কিছু সময় নীরবতা পালন করেন। এরপর তারা সীমান্তের ৭৯ নম্বর মেইন পিলার সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করে “ইব্রাহীমের রক্ত বৃথা যেতে দেব না”—এই স্লোগানে প্রতিবাদ জানান।

সন্ধ্যার দিকে এনসিপি প্রতিনিধি দলটি দর্শনা বাসস্ট্যান্ড মোড়ে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। সেখানে নেতারা জানান, তারা দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলতেই রাজনীতিতে এসেছেন এবং সীমান্ত হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।

প্রসঙ্গত, গত ২ জুলাই দুপুরে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার গালারমাঠ সীমান্ত এলাকায় ইব্রাহীম হোসেন ও কয়েকজন স্থানীয় কৃষক ঘাস কাটতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন। তখন বিএসএফের হালদাপাড়া ক্যাম্পের টহল দল তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ইব্রাহীম।

পরবর্তীতে ৮ জুলাই রাতে ইব্রাহীমের মরদেহ ভারতের বিএসএফ ও পুলিশ বাংলাদেশের বিজিবি ও দর্শনা থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তার মৃত্যুর পর থেকেই সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা এখনো শোকে ভেঙে পড়েছেন। তারা শুধু চায়—বিচার এবং ভবিষ্যতে আর কেউ যেন সীমান্তে এভাবে প্রাণ না হারায়।

コメントがありません