পাবনায় তীব্র উত্তেজনা, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে জমি নিয়ে সংঘর্ষ
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে নির্বাচন বিরোধ ও খাসজমি দখলকে কেন্দ্র করে অগ্নিকাণ্ড ও মারাত্মক হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা বিএনপির কর্মী তরিকুল ইসলাম শেখকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে, এরপর প্রতিবাদস্বরূপ তার স্বজনরা ও দলীয় নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ১১ নেতার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এই উত্তপ্ত ঘটনা ঘটে। পাবনার সিক্স মার্ডার এলাকা হিসেবে পরিচিত লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের কামালপুর ও সাহাপুরের চরগড়গড়ি আলহাজ মোড় এলাকায় সংঘর্ষটি তীব্র আকার ধারণ করে। আহত তরিকুল ইসলাম শেখ স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী এবং তিনি লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের কামালপুর ও সাহাপুর এলাকার রিকাত আলী শেখের ছেলে।
তরিকুলের আহত হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ও তরিকুলের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে তাদের দলের কর্মী তরিকুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। তাকে দ্রুত পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে, আহত তরিকুল ইসলামের স্বজনরা ও দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের ১১ নেতার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুল ইসলাম মেম্বার, আকুব্বার প্রাং, মোমিন প্রাং, আলামিন প্রাংসহ আরো কয়েকজন নেতার বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায়। এই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশ বড় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতা সাইদুল ইসলাম প্রামানিক জানিয়েছেন, "তরিকুল ইসলাম জমি দেখতে গিয়ে হামলার শিকার হন। আওয়ামী লীগ নেতা তরিকুল মেম্বারের নির্দেশে তার দলের লোকজন তরিকুলকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে।" তবে, আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তরিকুল ইসলাম এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের নিজস্ব জমিতে বসবাস করছি। এ জমি বিএনপি নেতা সাইদুল ইসলাম ও তার গোষ্ঠী দখল করে নিয়েছে, এর ফলস্বরূপ এই সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে।"
ঈশ্বরদী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, "ঘটনার খবর পাওয়ার পর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে রাতের অন্ধকারে নিরাপত্তার কারণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সঠিকভাবে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে পারেননি। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে, তবে থানায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।"
এই ঘটনার পর, পুলিশ এবং সেনা বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় টহল দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। তবে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায়, স্থানীয় জনগণের মধ্যে ভীতি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।
没有找到评论