বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা, যা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত, আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। জেলার চারটি সংসদীয় আসনে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা এবার আলাদাভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন। এ কারণে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া)
বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ, যিনি দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন, কক্সবাজার-১ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন। সালাহউদ্দিন আহমেদ এই আসনে অপরাজেয় হিসেবে বিবেচিত হলেও, জামায়াতের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ফারুক সংগঠনিকভাবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। ফারুক বলেছেন, "রাজনীতির মাঠে শেষ বলে কিছু নেই।"
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া)
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ এই আসনে প্রার্থী হচ্ছেন। অতীতে জোটবদ্ধ নির্বাচনে তিনি সহজেই নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবার বিএনপি আলাদা প্রার্থী দিচ্ছে। সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ বিএনপির পক্ষে প্রার্থী হতে পারেন।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও)
এ আসনে বিএনপির লুৎফুর রহমান কাজল ও মোহাম্মদ সহিদুজ্জামানের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী শহিদুল আলম বাহাদুর সাংগঠনিকভাবে মাঠে শক্তিশালী উপস্থিতি দেখাচ্ছেন।
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ)
জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বহুবার এ আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা নূর আহমেদ আনোয়ারী তার জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন।
প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ
কক্সবাজারের নির্বাচনী মাঠে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী আলাদাভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। জামায়াতের প্রার্থীরা সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হলেও বিএনপির ভোট ব্যাংক এখনও প্রভাবশালী। নির্বাচনে এ ধরনের পরিবর্তনের ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
স্থানীয় ভোটার আবদুর রহমান মনে করেন, "বিএনপির বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংকে প্রভাব ফেলতে পারে।" অপরদিকে, ভোটার আবদুর রশিদ বলেন, "জামায়াতের প্রার্থীরা যদি নিজেদের গণ্ডি থেকে বের হয়ে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেন, তাহলে পরিবর্তন আসতে পারে।"
এই নির্বাচনী প্রতিযোগিতা ভবিষ্যতে কক্সবাজারের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।