বিএনপি ক্ষমতায় আসতে হলে এনসিপির মুখোমুখি হতে হবে : যুব শক্তি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
At a discussion in Bhola, Jubo Shakti leaders declared that BNP must confront the National Citizen Party (NCP) if it wants power. They warned that without justice for martyrs’ blood, BNP cannot return..

ভোলায় এক আলোচনা সভায় জাতীয় যুব শক্তির নেতারা বলেন, বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এনসিপি। তারা স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন, শহীদের রক্তের হিসাব না দিয়ে বিএনপির ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়।

ভোলা জেলা জাতীয় যুব শক্তির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জাতীয় রাজনীতির উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দেন, বিএনপি যদি আগামী জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে, তবে তাদেরকে অবশ্যই জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মুখোমুখি হতে হবে।

১৮ আগস্ট, সোমবার অনুষ্ঠিত এই সভায় জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সংগঠক ইয়াসিন আরাফাত প্রধান আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টির মাধ্যমে জাতির যে চাওয়া-পাওয়া, সেই দাবিগুলো পূরণ না করে কোনোভাবে দেশে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। দেশের জনগণের রক্তের ঋণ এখনো পরিশোধ হয়নি। শহীদের রক্তের হিসাব গুনে গুনে না মিটিয়ে বিএনপিকে কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।”

তিনি আরও বলেন, “বিএনপি সবসময় চাঁদাবাজি, লুটপাট ও ক্ষমতার রাজনীতিকে আশ্রয় দিয়েছে। দেশের মানুষের কাছে তাদের ভাবমূর্তি আজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বিএনপি মনে করে যে, শুধু আন্দোলন করলেই জনগণ তাদের ক্ষমতায় বসাবে—এ ধারণা এখন ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছে। আজ বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় দেয়াল হচ্ছে এনসিপি। সেই দেয়াল ভেঙে সামনে এগোনোর মতো ক্ষমতা বিএনপির নেই।”

ইয়াসিন আরাফাত আরও একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা। শেখ হাসিনা ছিলেন শেখ মুজিবের চেয়েও বড় ফ্যাসিস্ট।” তার এই বক্তব্য সভাস্থলে উপস্থিত কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক শাহাদাত খন্দকার মঞ্জু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির ভোলা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মাকসুদুর রহমান ও আলামিনসহ আরও কয়েকজন স্থানীয় নেতা। বক্তারা একযোগে বলেন, জনগণের চাওয়া-পাওয়া বাস্তবায়নের একমাত্র মাধ্যম এনসিপি। যে কোনো দল যদি সেই বাস্তবতা মেনে না চলে, তবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আঁধারে ঢাকা পড়বে।

আলোচনা সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ আরও দাবি করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে শহীদদের রক্তের ঋণ শোধের নির্বাচন। যারা শহীদের রক্তের মূল্য দিতে ব্যর্থ হবে, তারা ক্ষমতার আসনে বসতে পারবে না। বিএনপি যদি জনগণের কাছে সত্যিকার অর্থে ফিরে আসতে চায়, তবে তাদেরকে এনসিপির নেতৃত্বকে স্বীকার করতে হবে এবং তাদের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।

সভাস্থলে সাধারণ কর্মীরা স্লোগান দেন—“শহীদের রক্তের ঋণ শোধ চাই, দুর্নীতির রাজনীতি চাই না।” এতে উপস্থিত জনতার মাঝে উত্তেজনা আরও বাড়ে। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এই বক্তব্য ও আলোচনা সভা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এনসিপি এখন রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে এবং তারা যে কোনো দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এনসিপি যদি তাদের আন্দোলন ও সংগঠনকে এইভাবে গোছানোভাবে চালিয়ে যেতে পারে, তবে বিএনপি তো বটেই, অন্য দলগুলোর জন্যও তা একটি শক্তিশালী বাধা হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে এনসিপি যদি শহীদের রক্ত ও ন্যায়ের প্রশ্নে তাদের অবস্থান আরও দৃঢ় করে, তবে জনগণের সমর্থনও ধীরে ধীরে তাদের দিকে চলে আসতে পারে।

অন্যদিকে, বিএনপি সমর্থক মহলে এনসিপি–যুব শক্তির এমন কঠোর মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তারা মনে করেন, এনসিপি মূলত বিএনপির ভোট ভাঙার জন্য সক্রিয় হয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো, দেশের রাজনীতিতে আজ নতুন এক শক্তি হিসেবে এনসিপি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।

No comments found