'বিএনপি করে নিজের লাইফটা শেষ করলাম’ এমন হৃদয়বিদারক কথায় শুরু। এরপর ফেসবুক লাইভে বিষপান করেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রমিক দলের আহ্বায়ক উমর ফারুক। বুধবার (২৫ জুন) রাতে নিজ বাড়িতেই তিনি বিষপান করেন। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, বিষপানের পর ছটফট শুরু করলে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
ফেসবুক লাইভে দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন তিনি। দলের নেতাকর্মীদের জন্য নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন, এমনকি স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যৎও নষ্ট হয়েছে বলেও জানান। তবুও আজ তিনি হয়েছেন অবহেলার শিকার।
৮ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের লাইভে এসে শিরোনামে তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপি করে নিজের লাইফটা শেষ করেছি। সামান্য একটি ঘটনা নিয়ে আমার নামে লালমনিরহাটে দুলু ভাই ও রাজিব ভাই ভিন্নভাবে অভিযোগ করেছেন। অথচ আমি কোনো খারাপ কাজ করিনি, বরং তাদের হাত ধরে ক্ষমাও চেয়েছি।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, পাটগ্রাম উপজেলার কিছু সুবিধাবাদী ও সুযোগসন্ধানী নেতার কারণে তিনি দল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে দখল, চাঁদাবাজির অভিযোগও তোলেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রচারের জন্য নিজের মালিকানাধীন জিনিস বিক্রি করে প্রতিটি ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ করেছেন বলেও জানান এ নেতা।
লাইভে এসে বিষপান করার আগে তিনি আবেগঘন শিরোনামে বলেন, ‘সকালে আমার মেয়ের এইচএসসি পরীক্ষা। জানি না সে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে কি না। আমি আর বাঁচতে চাই না। বিদায়, দুনিয়া।’
তিনি বলেন, ‘দলের জন্য কতবার মার খেয়েছি, কতোদিন বাড়িতে থাকতে পারিনি, না খেয়ে থেকেছি, তা কেউ জানে না। আজ সুদিনে এসে কিছু সুবিধাবাদী নেতার কারণে আমাকে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হলো।’
লাইভে দেখা যায়, তিনি কীটনাশক বিষ জাতীয় কিছুর বোতল দেখিয়ে পরে খেয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে বিষক্রিয়া শুরু হলে ছটফট করতে করতে চিৎকার শুরু করেন। তখন পরিবার লোকজন ছুটে আসে।ধারণা করা হচ্ছে, দলীয় নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও হতাশা থেকে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, (ওসি) জানান, বিষয়টি আমিও জেনেছি। উনাকে প্রথমে পাটগ্রাম সদর হাসপাতাল ও পরে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার পরিবার কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।