নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নে বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে এসে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদিন ফারুক দিলেন এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা। তিনি সরাসরি বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীকে 'ভাই ভাই' সম্বোধন করে দেশের মাটিতে আর কোনো রক্তপাত না হওয়ার আহ্বান জানান।
সোমবার (২০ অক্টোবর) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, "বিএনপি-জামায়াত ভাই ভাই, এই মাটিতে যেন আর ভাইয়ে-ভাইয়ে রক্ত না ঝরে।" তার এই মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে জোটের ঐক্যের বিষয়টি সামনে আনল।
জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্যে জয়নাল আবদিন ফারুক বলেন, "আপনারা যদি ক্ষমতায় আসেন, পিআর (পারসোনাল রিলেশন) ঠিক করে নেবেন। যখন ‘জুলাই সনদ’-এ দস্তখত করে ফেলেছেন, আসুন সবাই মিলে ইউনূস সাহেবকে সহযোগিতা করি।" ফারুকের এই বক্তব্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্যের একটি ইঙ্গিত বহন করে।
বিএনপিকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে উল্লেখ করেন জয়নাল আবদিন ফারুক। তিনি অভিযোগ করেন, "আগামী নির্বাচনে যাতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ধানের শীষ ক্ষমতায় আসতে না পারে— সেজন্য একটি মহল গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের আগুন দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।"
তিনি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে ষড়যন্ত্রের বিষয়টিকে আরও জোরদার করেন। ফারুক বলেন, বিমানবন্দর এবং মিরপুরের একটি ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগার ঘটনা ঠিক সেই সময়ে ঘটানো হলো, যখন সরকার জনগণের ভোটাধিকার দিতে যাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, "একটি চক্র, যারা বিগত ১৬ বছর আপনাদের দুঃখ দিয়েছে, মায়ের বুক থেকে সন্তানকে তুলে নিয়ে পুলিশের হাতে দিয়েছে, আজ আবার সেই আওয়ামী শেখ হাসিনার দোসররা আগুন লাগিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচনকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।"
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে ধানের শীষ জয়লাভ করলে দেশে আর কোনো বৈষম্য থাকবে না, হয়রানি থাকবে না, বিচার বিভাগকে লাথি মারা হবে না এবং 'আয়নাঘর' বানানো হবে না। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি বিএনপি সরকারের অধীনে ন্যায়বিচার ও সুশাসনের প্রতিশ্রুতি দেন।