বাংলা: মাসুদ সাঈদী বলেছেন, নির্বাচন শুধু ভোটের খেলা নয়; আগে হবে শহীদদের হত্যার বিচার ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কার। বাংলার জনগণ বিচারের আশ্বাস ছাড়া নির্বাচন মেনে নেবে না।
পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ সাঈদী বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৫টায় পিরোজপুরের তাফহীমুল কুরআন আলিয়া মাদ্রাসা মিলয়তনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন, যে বিচার ছাড়া বাংলার জনগণ কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।
তিনি বলেন, “একটি দল পায়ে পা দিয়ে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। তারা জামায়াতে ইসলামীকে উসকানি দিয়ে নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। আমরা তাদের উসকানিতে প্রতিক্রিয়া দেখাবো না। তবে আমরা শুধু নির্বাচন চাই না। আগে দরকার বিচার, আগে দরকার সংস্কার। যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে আমাদের পিতাদের শহীদ করেছে, তাদের বিচার হতে হবে। এরপরেই নির্বাচন হবে। এই আশ্বাস ছাড়া বাংলার জনগণ কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।”
সভায় মাসুদ সাঈদী আরও বলেন, “আমরা আমাদের স্বজন হারানোর কারণে বিচলিত হইনি, ভয়ও পাইনি। আমরা আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে মিথ্যাবাদীদের জবাব দিতে চাই। আমাদের দেশে এক সময় প্রচলিত ছিল, ‘মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত’। আমরা সেই পুরোনো ধারণা ভেঙে দিতে চাই। আমাদের দৌড় এবার জাতীয় সংসদ পর্যন্ত।”
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার আমির অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ, যিনি বলেন, “আল্লামা সাঈদীকে চিকিৎসার নামে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার শেষ হাসি আজও পৃথিবী ভুলতে পারে না।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক আমির ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সন্তান ড. ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। এছাড়াও, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক এর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী সহ একাধিক প্রভাবশালী নেতা এবং তাদের সন্তানরা। তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসন মোহাম্মাদ মুজাহিদের সন্তান আলী আহমেদ তাহকীক, লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমেদের সন্তান বেলাল আহমেদ, সাবেক কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির তাহসিন আজমাঈন, সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হাসান জামিল ও সোহায়েব হাসান ইমাম ওয়াফি, এবং দৈনিক সংগ্রাম এর সাবেক সম্পাদক সোহায়েল আব্দুল্লাহ শাকিল।
মাসুদ সাঈদীর এ ঘোষণার মাধ্যমে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, জনগণ বিচারের আশ্বাস ছাড়া ভোটকেন্দ্রে অংশগ্রহণ করবে না। তিনি পুনরায় বার্তা দেন, নির্বাচন শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি বিচার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার একটি মাধ্যম। জনগণ প্রত্যাশা করে, যারা শহীদ করেছে এবং যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছে, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মাসুদ সাঈদী বলেন, “আমরা আমাদের পরিবারের স্বজন হারিয়েছি, কিন্তু আমরা ভয় পাইনি। জনগণকে ভোটের মাধ্যমে সত্য প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। এটি হবে বাংলার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এক নতুন অধ্যায়। নির্বাচনের আগে আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থার সংস্কার অপরিহার্য।”
সভায় উপস্থিত নেতারা মাসুদ সাঈদীর ঘোষণাকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, এটি দেশের গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তারা আশ্বাস দেন, জনগণকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগে সঠিক বিচার এবং শহীদদের পরিবারের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।