বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ঘোষণা দিয়েছেন, এবার জনগণ ভোট ডাকাত ও লুটেরাদের ভোট দেবে না। তিনি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেন এবং জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের দাবি এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম এক কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “জনগণ এবার আর কোনো ভোট ডাকাত ও লুটেরাদের ভোট দেবে না।”
বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আল হেরা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত জেলা জামায়াতের নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন। তার ভাষণে তিনি স্পষ্ট করে জানান, দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে এবং জনগণ কোনোভাবেই ষড়যন্ত্র বা চক্রান্তের কাছে মাথানত করবে না।
মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজনে জনগণকে আন্দোলনে নামতে হবে। তিনি জুলাই মাসে ঘোষিত “জুলাই ঘোষণা” ও “জুলাই সনদ”কে আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানান। তার মতে, জনগণের আস্থার জায়গা তৈরি করতে হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জামায়াতের ঘোষিত সাত দফা দাবি মেনে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “বাকশালের বুলেটিনখ্যাত সংবিধান দিয়ে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে ব্যাপক সংস্কার আনতে হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, অতীতের স্বৈরাচার আমলে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই দেশপ্রেমিক, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য কর্মকর্তাদের হাতে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে। তার মতে, কাউকে সুবিধা দেওয়া বা কাউকে বাদ দেওয়া হলে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং জনগণের আস্থা হারাবে।
এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা অঞ্চল টিমের সদস্য আব্দুস সাত্তার এবং কুমিল্লা জেলা উত্তরের আমীর অধ্যাপক আব্দুল মতিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আমীর মাওলানা মোবারক হোসেন আকন্দ এবং সঞ্চালনা করেন জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আমিনুল ইসলাম। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক জোনায়েদ হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের প্রার্থী আতাউর রহমান সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাতেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মো. নকিবুল হুদা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম।
দায়িত্বশীল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন জেলা আসন কমিটির সদস্য, উপজেলা ও পৌরসভা কমিটির নারী-পুরুষ প্রতিনিধিরা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক ফায়জুল করিম মনোয়ার, কাজী সিরাজুল ইসলাম, রাজিফুল হাসান বাপ্পী, আবুল বাশার ভূঁইয়া ও মো. রোকন উদ্দিন প্রমুখ।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে জামায়াত নেতৃত্ব স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর কোনো প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নেবে না। জনগণের কাছে বার্তা পৌঁছে গেছে—পরিবর্তন চাইলে এবার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই।