গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ভাত ও ভোটের অধিকার ফেরাতে তারা ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন করেছেন। তিনি আহ্বান জানান আগামী নির্বাচনে সৎ ও জনবান্ধব প্রার্থীকে বিজয়ী করার।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্যই তারা ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র কেবল নামেই টিকে থাকে, বাস্তবে তা কার্যকর হয় না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি আহ্বান জানান, এমন প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য যিনি সত্যিকারের জনগণের প্রতিনিধি হয়ে মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতার কথা বলবেন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর কলেজ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আয়োজিত এক পথসভায় নুরুল হক নুর এই বক্তব্য দেন। যশোরে এক রাজনৈতিক সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে গোপালগঞ্জে থেমে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পথসভায় অংশ নেন তিনি। এসময় গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, “আমরা কখনো ব্যক্তিগত স্বার্থে রাজনীতি করি না। ভাত ও ভোটের অধিকার রক্ষার জন্যই আমরা আন্দোলন করেছি। দেশের প্রতিটি মানুষ যাতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সেই গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।” তিনি আরও যোগ করেন, দেশের মানুষকে এখন সত্য-মিথ্যা চেনার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং সৎ ও দেশপ্রেমিক নেতাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই এলাকার মানুষরা সবাই খারাপ নন। অনেক ভালো মানুষও আছেন, যারা ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে চান। তবে যারা অতীতে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল বা জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের কখনো ক্ষমা করা যাবে না।” তিনি তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান এবং বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র সম্ভব নয়।
নুরুল হক নুর আরও উল্লেখ করেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বারবার। তিনি বলেন, “যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার এই বাহিনীকে পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত করতে না পারে, তার জন্য রাষ্ট্র সংস্কার অত্যাবশ্যক। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রকৃত অর্থে জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”
পথসভায় গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানও বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা টানা ১৬ বছর গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। তিনি দুঃশাসন প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতায় টিকে ছিলেন। জনগণের অধিকার হরণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত করা এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করাই ছিল তার শাসনের মূল বৈশিষ্ট্য।”
রাশেদ খান আরও দাবি করেন, আজ দেশের মানুষ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আর দেশের অর্থনীতি গভীর সংকটে নিমজ্জিত। তিনি বলেন, “গণ অধিকার পরিষদ এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে চায় যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারবে, যেখানে ভাত ও ভোটের অধিকার সবার জন্য নিশ্চিত থাকবে।”
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, দেশের রাজনীতিতে আজ যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা কেবল জনবান্ধব নেতৃত্ব দিয়েই পূরণ করা সম্ভব। নুরুল হক নুর ও গণ অধিকার পরিষদের নেতৃত্ব সেই আশা জাগিয়েছে।
পথসভায় বক্তারা একযোগে বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন। তারা বিশ্বাস করেন, সাধারণ মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে দেশে নতুন করে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠা সম্ভব।