ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: শান্তিপূর্ণ জনপদ হিসেবে পরিচিত ভালুকায় কিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব দিনে দিনে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে চায়ের দোকান, বাজার কিংবা স্কুল-কলেজের আশেপাশে-সবখানেই কিশোরদের দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা, হুমকি-ধমকি এবং সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে।
সামাজিক সোশাল মিডিয়ায় এ বিষয় নিয়ে কয়েকজন মন্তব্য করেন তা তুলে ধরা হল: মোঃ মাসুদ পাঠান বলেন, “কারা এই কিশোর গ্যাংকে সেলটার দিচ্ছে? আমাদের সমাজে যদি প্রভাবশালী কেউ প্রশ্রয় না দিত, তাহলে তারা কখনই এভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারত না।”
আকাশ মন্ডল টুটুল হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “সংস্কৃতি থেকে আমরা আর বের হতে পারছি না। আগে শুনতাম ‘অমুক ভাইয়ের লোক’, এখন শুনি ‘তমুক ভাইয়ের লোক’। এই ভাইদের নামেই গ্যাং চলে। আর তারাই এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়।”
চিকিৎসক ডাঃ মুশফিকুর রহমান বলেন, “গত তিন-চার বছর ধরে কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যায় ব্যাপক বৃদ্ধি হয়েছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া অনেকেই এখন গ্যাংয়ের সদস্য। এদের মধ্যে মাদক সেবন ও বহির্বিভাগীয় সন্ত্রাসী কার্যকলাপও বেড়েছে।”
সাবেক ছাত্রনেতা ও সমাজসেবক কায়সার আহমেদ কাজল বলেন, “আমাদের ভালুকার সবাইকে মনে রাখতে হবে-শান্ত জনপদ ভালুকায় যদি অপরাধের অভয়ারণ্য তৈরি হয়, তাহলে এই জনপদের ভবিষ্যৎ কেউ রক্ষা করতে পারবে না। আজকে যে গ্যাং অন্যের ক্ষতি করছে, কাল সে আমাদের কারও সন্তান হতে পারে।”
শেখ রাশেদ বলেন, “ভালুকা কিশোর গ্যাংয়ে ভরে গেছে। এদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা উচিত। না হলে পুরো এলাকার ভবিষ্যৎ অন্ধকার।”
স্থানীয় প্রশাসন একাধিকবার কিশোর গ্যাং দমনে অভিযান চালালেও তা দৃশ্যত টেকসই হয়নি। অনেক সময় প্রভাবশালীদের সুপারিশে ধরা পড়া কিশোররা ছাড়া পেয়ে আবারও গ্যাংয়ে ফিরে যায় বলে অভিযোগ আছে।
সুশাসনের জন্য সুশৃঙ্খল সমাজ দরকার। কিশোরদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধরে রাখা, মাদক থেকে দূরে রাখা, পারিবারিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বড় করে তোলা এবং সবচেয়ে জরুরি-ভাই সংস্কৃতি’ থেকে বেরিয়ে আসা।
ভালুকার সচেতন নাগরিকরা এখন একটি প্রশ্নই তুলছেন-“আর কতকাল এই ভয়ংকর ছায়ার নিচে বসবাস করবো আমরা?”