ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে এনসিপি নেতারা বলেন, বেতন-ভাতা ফেরত দিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। জুলাই হত্যার বিচার ছাড়া সরকারকে কিছু ভাবতে নিষেধ।
চাঁদপুরে আয়োজিত এক পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠজনদের পেছনে সরকারিভাবে প্রভাব খাটানোর যে অভিযোগ রয়েছে, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলেন বর্তমান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, “স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যদি ন্যূনতম নৈতিকতা বজায় রাখতে চান, তবে অবশ্যই তাকে সরকারের দেয়া সমস্ত বেতন-ভাতা ফেরত দিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অনুষ্ঠিত এনসিপির পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। বক্তৃতায় তিনি বলেন, এই সরকার যেভাবে এক ব্যক্তির আড়ালে গোটা প্রশাসনকে চালাচ্ছে, সেটা দেশের জন্য ভয়াবহ সংকেত। এটা শুধু প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা নয়, বরং জাতির সঙ্গে সরাসরি প্রতারণা।
এদিকে একই দিন সকালে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, “জুলাই মাস এলেই শহীদদের পরিবার নতুন করে কষ্টে ভোগে। তারা শুধু বিচারের আশায় তাকিয়ে থাকে। কিন্তু এতো বছরেও বিচার হয়নি। শহীদদের মায়েরা চোখের পানি শুকিয়ে ফেলেছেন। আরেকটি জুলাই পার হয়ে যাচ্ছে—কিন্তু কোনো দৃশ্যমান বিচার আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
সারজিস আলম আরও বলেন, আমরা সরকারকে স্পষ্ট করে বলতে চাই—আপনারা যদি জুলাই ঘটনার ন্যূনতম বিচার না করেন, তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে অন্য কোনো চিন্তা করতে পারবেন না। খুনি হাসিনাসহ যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার চাই—এটাই শহীদ পরিবারের একমাত্র দাবি।
সকালের কুশল বিনিময়ের সময় শহীদ পরিবারগুলোর সদস্যরা এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দেখে আবেগে ভেঙে পড়েন। কান্নায় ডুবে তারা তাদের স্বজন হারানোর যন্ত্রণার কথা জানান এবং কিভাবে বিচারের আশায় এখনও প্রতিদিন কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন, সে কথাও বলেন।
পরে ঢাকা থেকে চাঁদপুর হয়ে কুমিল্লা অভিমুখে লংমার্চের অংশ হিসেবে সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণ থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এক শোক র্যালি বের করা হয়। এ সময় বক্তৃতা দেন এনসিপি নেতা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, শাহরাস্তি ইউনিটের নেতা মাহফুজুর রহমানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। শোক র্যালির শেষে হাজীগঞ্জে শহীদ আজাদ চত্বর উদ্বোধন করা হয় এবং সেখান থেকে পদযাত্রা শুরু করে দোয়াভাঙ্গায় এসে শেষ করা হয়।
নেতারা বলেছেন, এই আন্দোলন কোনো দলের জন্য নয়, এটা শহীদদের জন্য, এটা ন্যায়ের জন্য। এই বার্তা যদি সরকার না বোঝে, তাহলে জনগণই বুঝিয়ে দেবে।