বায়তুল মোকাররম মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনে ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, মূল কাঠামো ঠিক রেখে ভেতরে আধুনিক সাজসজ্জা করা হবে এবং মানবসেবার গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
ঢাকার হৃদয়ে অবস্থিত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্য বর্ধনে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানিয়েছেন, এই মহাপরিকল্পনার জন্য ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বিএমএ মিলনায়তনে শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন আয়োজিত জাতীয় কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সময় তিনি জানান, বায়তুল মোকাররম মসজিদের মূল ঐতিহাসিক কাঠামো অক্ষুণ্ন রাখা হবে। তবে ভেতরের অংশে আধুনিক সাজসজ্জা, উন্নত সুযোগ-সুবিধা এবং দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।
ড. খালিদ আরও বলেন, মসজিদ পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সরকার ইতোমধ্যে একটি ‘মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ প্রণয়ন করেছে। এর মাধ্যমে মসজিদ কমিটির স্বৈরাচারী প্রবণতা রোধ করা হবে। খুব শিগগিরই এই নীতিমালা চূড়ান্ত করে সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
এদিন দুপুরে রাজধানীর বারিধারায় আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের আয়োজনে অসহায় ও এতিম শিশুদের ভরণপোষণের জন্য চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ধর্ম উপদেষ্টা। সেখানে তিনি মানবসেবার গুরুত্বের উপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সব ধর্মেই দান, সাহায্য ও সহানুভূতির কথা বলা হয়েছে। মানবসেবা প্রতিটি ধর্মেই পবিত্র কর্তব্য হিসেবে বিবেচিত হয়।”
তিনি আরও বলেন, মানবসেবার মাধ্যমে সমাজে সহানুভূতি, নৈতিকতা, ধৈর্য ও আত্মত্যাগের মতো গুণাবলির বিকাশ ঘটে। মানুষ যখন একে অপরের পাশে দাঁড়ায়, তখন সামাজিক ঐক্য, ভ্রাতৃত্ববোধ ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। এভাবে সমাজে শান্তি ও ভারসাম্য বজায় থাকে।
ড. খালিদ হোসেন উল্লেখ করেন, মানবসেবা এমন এক কাজ যা হৃদয়ে গভীর মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়; যা অর্থ বা খ্যাতি দিয়েও অর্জন সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানে তিনি সারাদেশের ৮১টি মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিনিধিদের হাতে মোট তিন কোটি ৭০ লাখ ২৮ হাজার টাকার চেক তুলে দেন।
এই অর্থ সহায়তা এসেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইমদাদুল মুসলিমিনের অর্থায়নে। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিন জমির উদ্দিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক (প্রকল্প-১) মো. আনোয়ার হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সরকারের এই উদ্যোগ শুধু বায়তুল মোকাররম মসজিদের আধুনিকীকরণই করবে না, বরং দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মসজিদটি আরও দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠলে দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের আগমন বৃদ্ধি পাবে, যা ধর্মীয় পর্যটন ও সংস্কৃতিতেও নতুন মাত্রা যোগ করবে।