close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

বাড়তি ভাতা ও জাতীয়করণের দাবিতে টানা ৭ম দিনে শিক্ষকদের কালো পতাকা মিছিল; অনশনে শহীদ মিনার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
MP-listed teachers have been on strike at the Central Shaheed Minar for 7 days, demanding increased house rent, medical, and festival allowances. They have vowed not to leave until their demands are m..

বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন দাবিতে টানা ৭ দিন ধরে শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। নেতারা জানান, দাবি আদায় না হলে শহীদ মিনার ছাড়বেন না, চলছে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি।

ন্যায্য দাবি আদায়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। টানা ৭ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর শনিবার (আজ) দুপুরে তারা কালো পতাকা মিছিলের ডাক দিয়েছেন। মূলত, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে শিক্ষকরা এই তীব্র আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের নেতৃত্বে এই আন্দোলন এখন অনশন কর্মসূচিতে রূপ নিয়েছে। শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, তাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা শহীদ মিনার ত্যাগ করবেন না। এই কঠোর অবস্থান দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এক গভীর সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, "গত ১০ অক্টোবর রাত থেকে শুরু হওয়া অবস্থান কর্মসূচি এখন অনশনে রূপ নিয়েছে।" তিনি উল্লেখ করেন, দেশের প্রাথমিক শিক্ষকদের চার লাখ সদস্য এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর ভিপিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এই যৌক্তিক দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে শিক্ষা উপদেষ্টার ‘অসৌজন্যমূলক আচরণ’ এবং বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন বিলম্বে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ক্ষোভের প্রতিবাদ জানাতেই তারা গতকাল (শুক্রবার) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন।

অধ্যক্ষ দেলাওয়ার আজিজী আরও জানান, আজ দুপুর ১২টায় কালো পতাকা মিছিলের আয়োজন করা হবে। এই মিছিলের মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারীরা রাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অবহেলার প্রতিবাদ জানাবেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "যারা আমাদের ন্যায্য অধিকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাদের বর্জনের সময় এসেছে।

এই আন্দোলনের তীব্রতা তুলে ধরে তিনি বলেন, "বিদ্যালয়ের ঘণ্টা বাজবে না, কোথাও ক্লাস হবে না। শহীদ মিনারই হবে আমাদের ঠিকানা।" শিক্ষক-কর্মচারীরা সারাদেশের পাঠদান বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন, যা ইতোমধ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

উল্লেখ্য, এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত রোববার (১২ অক্টোবর)। সেদিন প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষকদের ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পরই শিক্ষকরা আন্দোলনকে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেন এবং দেশব্যাপী কর্মবিরতি শুরু করেন।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মূল দাবিগুলো হলো—২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা নিশ্চিত করা। সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা জানানো হলেও, শিক্ষকরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের সুস্পষ্ট ঘোষণা, এই দাবিগুলোর প্রজ্ঞাপন না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।

শিক্ষক নেতারা দৃঢ়ভাবে বলছেন, তাদের এই আন্দোলন শুধু ভাতার জন্য নয়, বরং শিক্ষার জাতীয়করণ এবং শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য। তাদের টানা অবস্থান এবং অনশন কর্মসূচির ফলে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, যা লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।


এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি উপেক্ষা করে সরকারের কালক্ষেপণ দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনার শঙ্কা তৈরি করছে।

No comments found


News Card Generator