close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বাংলাদেশের পরিবেশ সুরক্ষায় মন্ত্রণালয়ের যুগান্তকারী পদক্ষেপ:সৈয়দা রিজওয়ানা..

Mahamud Mithu avatar   
Mahamud Mithu
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মন্ত্রণালয়ের উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ।..

বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একাধিক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা দেশের বন ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষা এবং পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গত এক বছরে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে মন্ত্রণালয় বনভূমি পুনরুদ্ধার, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধিতে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

### বনভূমি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ

মন্ত্রণালয় কক্সবাজারের ৭০০ একর জমি এবং বাফুফের জন্য নির্ধারিত ২০ একর সংরক্ষিত বনভূমি পুনরুদ্ধার করেছে। এছাড়াও সোনাদিয়ার ৯ হাজার ৪৬৭ একর এবং জাফর আলম ক্যাডেট কলেজের নামে বন্দোবস্ত ১৫৫.৭০ একর জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ৫,০৯৩ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার করে সেখানে পুনরায় বনায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

চুনতি বন পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় ৩৭,১৮২ একর জমি থেকে আকাশমনি গাছ সরিয়ে প্রাকৃতিক বন ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। মধুপুর ও শেরপুরেও একই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে হাতির করিডোর পুনরায় কার্যকর হয়।

### বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ

বিলুপ্ত প্রজাতির দেশি ময়ূর ফিরিয়ে আনা সহ সাম্বার, কালোমুখ প্যারা পাখি, উল্লুক ও হাতির সুরক্ষায় সফল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বন্যপ্রাণী ও মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনে ১৫৯টি ইআরটি টিম গঠন এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মৌলভীবাজারের লাঠিটিলা সাফারি পার্ক প্রকল্প বাতিল এবং ক্যাপটিভ হাতি সংরক্ষণের অভয়ারণ্য গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

### আইন ও নীতি পরিবর্তন

রাজশাহীর বিল জোয়ানা ও বিল ভেলাসহ কয়েকটি জলাভূমিকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি বন্যপ্রাণী আইন সংশোধন ও ট্রাস্ট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট ২৯৩টি অভিযান চালিয়ে ৫,৬৮৪টি প্রাণী উদ্ধার করেছে। সাফারি পার্ক থেকে চুরি হওয়া লেমুরও উদ্ধার করা হয়েছে।

### পরিবেশ সচেতনতা ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম

জনদাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্যালিপটাস ও একাশিয়া গাছের চারা উৎপাদন, বিপণন, রোপণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নার্সারির এসব গাছ ধ্বংস করা হয়েছে। পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধিতে ‘গাছ থেকে পেরেক তুলে ফেলা’ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে এবং দেশে প্রথমবারের মতো নেচার লার্নিং সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে যুক্ত করে বন, বন্যপ্রাণী ও শব্দদূষণ রোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

### পরিবেশ ও জলবায়ু সংরক্ষণ উদ্যোগ

ঢাকার শপিংমলসমূহে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে এবং কাঁচাবাজারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ সহজলভ্য করতে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান’ প্রণয়ন এবং ৮৩০টি অবৈধ ইটভাটা ভেঙে ফেলা হয়েছে।

### ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও অংশগ্রহণ

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের পরিবেশ সুরক্ষা, বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং জলবায়ু অভিযোজন প্রক্রিয়ায় চলমান অগ্রযাত্রায় সকল নাগরিকের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগগুলো শুধুমাত্র পরিবেশ সুরক্ষায় নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্থায়িত্ব আনার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

コメントがありません