বাজিতপুরে ঘোড়াউত্রা নদীতে নৌকাডুবি: ১২টি মোটরসাইকেলসহ যুবক নিখোঁজ।..

MD JAHANGIR ALAM avatar   
MD JAHANGIR ALAM
গতকাল রাতে বাজিতপুরে ভয়াবহ নৌকাডুবি: ঘোড়াউত্রা নদীতে ন ১২টি মোটরসাইকেল সহ নিখোঁজ ১..

প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের বিখ্যাত অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইনের নয়নাভিরাম হাওর ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে একদল যুবকের আনন্দ মুহূর্তেই বিষাদে পরিণত হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে বাজিতপুরের কাছে ঘোড়াউত্রা নদীতে কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে তাদের বহনকারী ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি ডুবে যায়। এই ঘটনায় ১২টি মোটরসাইকেলসহ সঞ্জিত দাস (৪০) নামের এক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। বাকিরা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও বন্ধুকে হারিয়ে তারা বাকরুদ্ধ।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ শহর থেকে একদল ভ্রমণপিপাসু যুবক ১২টি মোটরসাইকেল নিয়ে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইনে গিয়েছিলেন। সারাদিন হাওরের মুক্ত বাতাস আর পানিতে উচ্ছ্বাস শেষে সন্ধ্যায় তারা বাড়ি ফেরার জন্য মিঠামইন থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় (ট্রলার) ওঠেন। তাদের গন্তব্য ছিল বাজিতপুরের পাটুলী ফেরিঘাট, যেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তারা কিশোরগঞ্জ শহরে ফিরতেন।
রাত আনুমানিক ৯টার দিকে নৌকাটি যখন ঘোড়াউত্রা নদীর মাঝপথে পৌঁছায়, ঠিক তখনই হঠাৎ আকাশ কালো করে প্রচণ্ড বেগে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। উত্তাল ঢেউ আর ঝোড়ো বাতাসে নৌকাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং একপর্যায়ে ১২টি মোটরসাইকেল ও আরোহীদের নিয়ে নদীতে ডুবে যায়।
নৌকাডুবির আকস্মিকতায় যাত্রীদের মধ্যে হাহাকার শুরু হয়। সাঁতার জানা থাকায় নৌকায় থাকা বাকি যুবকরা জীবন বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে একে একে সাঁতরে নদীর তীরে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তাদের বন্ধু সঞ্জিত দাস নদীর উত্তাল স্রোতে তলিয়ে যান। চোখের সামনে বন্ধুকে হারিয়ে তীরে ওঠা যুবকরা শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বাজিতপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে বৈরী আবহাওয়া ও রাতের অন্ধকারের কারণে তাৎক্ষণিক উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নিখোঁজ সঞ্জিত দাসের সন্ধানে এবং ডুবে যাওয়া মোটরসাইকেলগুলো উদ্ধারে নদীতে অভিযান চালাচ্ছে।
বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মুরাদ হোসেন জানান, এটি একটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। একদল যুবক ভ্রমণ শেষে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। আমরা নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।"
একটি আনন্দময় ভ্রমণ যে এমন মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনবে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। নিখোঁজ সঞ্জিতের পরিবার ও বন্ধুদের কান্নায় ঘোড়াউত্রার তীরবর্তী বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এই ঘটনা পুরো এলাকায় গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে।

Walang nakitang komento