কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো যুবলীগ ক্যাডারখ্যাত জমরুত এক বছরেরও বেশি সময় পার হলেও এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খাতায় তিনি পলাতক থাকলেও এলাকায় প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১২ সালের আলোচিত মাইজচর বাহের বালির চুন্নু ওরফে ডন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জমরুত। শুধু ওই মামলাই নয়, ছাত্র আন্দোলনে হামলা, নদী দখল, হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাজিতপুরের অপরাধ জগতে আধিপত্য বিস্তার করেছিল এই জমরুত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গেলো বছর জুলাই-আগস্ট মাসে আন্দোলন দমাতে জমরুত ও তার সহযোগীরা বাঁশমহলে সশস্ত্র অবস্থায় ছাত্রজনতার উপর হামলা চালায়। এমনকি বাজিতপুর বাজারে সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের বিল্ডিংয়ের উপর থেকেও নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে এলাকায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়।
২০১২ সালে নিহত চুন্নু ওরফে ডনের বড় ভাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে এক যুগেরও বেশি সময় আগে। এখনো বিচার পাইনি। জমরুতসহ সকল আসামীর বিচার চাই।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত জমরুত এখনো পৌর এলাকায় অবাধে চলাফেরা করছেন। পুলিশের উপস্থিতিতেও তাকে দেখা গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। একজন ভুক্তভোগী ছাত্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “অস্ত্রধারী হামলাকারীকে বছরের পর বছর গ্রেপ্তার না করা মানে অপরাধীদের প্রশ্রয় দেওয়া।”
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জমরুতকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। তবে কবে নাগাদ তাকে ধরা সম্ভব হবে, তা নিশ্চিত নয়।
সচেতন মহলের দাবি, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যদি কেউ বছরের পর বছর আইনের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে, তবে সমাজে অপরাধ প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই তারা দ্রুত জমরুতকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার জোর দাবি জানিয়েছেন।