কুমিল্লায় আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এবং তার কন্যা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনাসহ মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এই চার্জশিটটি দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুমিল্লা কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিনুল ইসলাম।
মামলার প্রেক্ষাপট এবং ঘটনা বর্ণনায় জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট কুমিল্লা নগরীর মোগলটুলি এলাকায় বিজয় মিছিলে অতর্কিত গুলিতে আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ আহত হন। তিনি গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ১৬ আগস্ট ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনা সম্পূর্ণ কুমিল্লা শহরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং আইনজীবী মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ঘটনার পর নিহতের সহকারী আইনজীবী মোস্তাফা জামান জসিম বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে পাঁচজনের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৫ জনকে আসামি করা হয়। দীর্ঘ এক বছরের তদন্ত শেষে পুলিশ এ দুর্ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করে।
নিহত আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ কুমিল্লা আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তার বাসা কুমিল্লা নগরীর রাণীর দিঘীর দক্ষিণপাড় এবং গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে।
এই মামলার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কুমিল্লার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এই ঘটনা বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে সাবেক সংসদ সদস্য এবং সিটি কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় এটি রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে। আইনজীবী সমাজ এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ বিচার দাবি করছে।
মামলার পরবর্তী পদ্ধতি এবং আইনি প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে এই ঘটনায় কুমিল্লা শহরের সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিচার প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা এবং স্বচ্ছতার আহ্বান জানিয়েছেন। এই মামলার ফলাফল কুমিল্লার স্থানীয় রাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।