সাবেক সচিব এবিএম আবদুস সাত্তারের আট উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। তিনি প্রমাণ থাকলে তা আইনগত কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়ার আহ্বান জানান।
আটজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আসা সাবেক সরকারি কর্মকর্তা এবিএম আবদুস সাত্তারের মন্তব্যকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন— কারও অসদাচরণের প্রমাণ থাকলে তা গোপন না রেখে অবিলম্বে যথাযথ আইনগত ও তদন্তকারী সংস্থার কাছে জমা দিতে হবে।
শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমরা দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই যে, উপস্থাপিত অভিযোগগুলো তথ্যভিত্তিক নয়। জনপরিসরে আলোচনা হতে হলে তা অনুমানের ওপর নয়, বরং বাস্তব প্রমাণের ওপর নির্ভর করাই শ্রেয়।”
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবং বিসিএস ৮২ ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবিএম আবদুস সাত্তার দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তত আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন দুর্নীতি’র প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। তার ভাষায়, “জুলাই আন্দোলনের রক্তের ওপর দিয়ে যারা চেয়ারে বসেছে, সেই আট উপদেষ্টার দুর্নীতির বিস্তারিত তথ্য আমার কাছে আছে। এমনকি গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও এসব প্রমাণ রয়েছে। তবুও তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।”
সাত্তার আরও অভিযোগ করেন, গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ বা বদলির ক্ষেত্রে এই আট উপদেষ্টার অনুমোদন ছাড়া কিছুই ঘটে না। তবে, তিনি কারও নাম প্রকাশ করেননি।
এ অভিযোগের জবাবে ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, “প্রমাণ ছাড়া ঢালাও অভিযোগ তোলা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক এবং এটি জনআস্থা ক্ষুণ্ণ করে। আমরা স্বচ্ছতা, সততা এবং জবাবদিহির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। যদি মি. সাত্তারের কাছে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ থাকে, আমরা তাকে অনুরোধ করছি তা দ্রুত যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যতক্ষণ না নির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করা হচ্ছে, ততক্ষণ এমন অভিযোগ জনপরিসরে অযথা বিভ্রান্তি তৈরি করবে। গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতরে ন্যায্য প্রক্রিয়া মেনে চলা জরুরি, এবং প্রশাসনের ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রত্যেকেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা উচিত।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের এই বিবৃতির মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে সরকার সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন দেখার বিষয়, এবিএম আবদুস সাত্তার তার দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ সামনে আনেন কি না, এবং সেটি নিয়ে আইনগত প্রক্রিয়া এগোয় কিনা।