close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

আসিফ নজরুল ছাড়া কোনো উপদেষ্টা আন্দোলনে অংশ নেয়নি: মেজর হাফিজ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
At a meeting in Khulna, Major Hafiz said only Asif Nazrul from the advisory council joined the movement, expressing strong resentment over police and army roles.

খুলনায় এক সভায় মেজর হাফিজ বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের একমাত্র আসিফ নজরুল আন্দোলনে অংশ নেন। পুলিশ-সেনার ভূমিকা নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

খুলনায় জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল মহানগর শাখা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় উপদেষ্টা পরিষদের কর্মতৎপরতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। শনিবার আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, গত এক বছরে উপদেষ্টা পরিষদ কোনো উল্লেখযোগ্য সংস্কার করতে পারেনি। তার ভাষায়, “এক আসিফ নজরুল ছাড়া আর কেউ আন্দোলনে অংশ নেয়নি।

মেজর হাফিজ বলেন, আন্দোলনের সময় দেশের মানুষ অসীম ত্যাগ স্বীকার করেছে, কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য মাঠে নামার সাহস দেখাননি। তিনি উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র আইনবিদ ও শিক্ষক আসিফ নজরুল সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, যা প্রশংসনীয় হলেও বাকিদের নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, পুলিশ-মিলিটারি সরাসরি গুলি করে দেড় হাজারের অধিক ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। এই পুলিশ বাহিনীর অধিকাংশ সদস্যকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া উচিত ছিল। আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়াদের মধ্য থেকে নিয়ে নতুনভাবে পুলিশ বাহিনী গঠন করা দরকার ছিল।”

সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে মেজর হাফিজ বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা এই বাহিনী গঠন করেছিলাম। অথচ হাসিনার পতনের সময় তারা পলায়নরত মসজিদের খতিব, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ অফিসারসহ দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আশ্রয় দিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা হাসিনার শাসন প্রলম্বিত করে নানা অন্যায় সুবিধা ভোগ করেছে।”

বক্তব্যের শুরুতেই তিনি জানান, “আমার বয়স এখন ৮১, শারীরিকভাবে অসুস্থ। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে কথা বলার সুযোগ এলে আমি অনেক কথা বলে ফেলি।”

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিল। শেখ মুজিব স্বাধীনতার কথা কখনো চিন্তা করেননি। আওয়ামী লীগ নেতারা তখন কলকাতার সার্কাস ও থিয়েটারে ব্যস্ত ছিলেন। মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরই ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর এবং সাধারণ মানুষ জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

তিনি আরও যোগ করেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শহরের ফিটফাট পোশাক পরা লোকেরা মুক্তিযোদ্ধা সেজে বসে, আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেয়নি। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে, আর রাজনীতিবিদরা কখনো মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দিতে চায়নি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি শেখ আলমগীর হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, জেলা আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু এবং মহানগর সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন।

মেজর হাফিজের বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল যে, তিনি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আচরণ, এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সমাজ ও রাজনীতির অবহেলা নিয়ে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, প্রকৃত পরিবর্তন আনতে হলে নেতৃত্বের সাহস, সঠিক সংস্কার, এবং ইতিহাসের সঠিক মূল্যায়ন জরুরি।

Ingen kommentarer fundet