close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

আরএমজি, ওষুধ ও পাট শিল্পে চরম মন্দা: রপ্তানি আয়ে পতন, কারখানা বন্ধের উদ্বেগ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রপ্তানি আয় প্রায় ১০ শতাংশ ঋণাত্মক (10% negative)। এই বিপুল নেতিবাচক প্রভাবের কারণে ইতোমধ্যে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।..

চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের মধ্যে গেল তিন মাস ধরেই বছর ব্যবধানে তৈরি পোশাক শিল্প (RMG)-এর রপ্তানি আয়ে তীব্র নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (EPB)-এর হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এই উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে, যেখানে দেশের প্রধান রপ্তানি খাতগুলো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনার শিকার হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক শিল্প এখন মন্দার কবলে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই খাতের অবস্থা 'ভালো না'-এর প্রমাণ হিসেবেই এই নেতিবাচক ধারা দৃশ্যমান। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রপ্তানি আয় প্রায় ১০ শতাংশ ঋণাত্মক (10% negative)। এই বিপুল নেতিবাচক প্রভাবের কারণে ইতোমধ্যে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পোশাক শিল্পের এই দশার জেরে এর 'অ্যাকশন রিঅ্যাকশন' বা সামগ্রিক প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পোশাক শিল্পের মন্দা শুধু এই খাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং এর ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের অন্য সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাতগুলোতেও:

  • ওষুধ শিল্প: যে ওষুধ শিল্প জুলাই এবং আগস্ট মাসে রপ্তানি আয়ে একটি ইতিবাচক ধারা ধরে রেখেছিল, সেই খাতও সেপ্টেম্বর মাস থেকে পতনের মধ্যে রয়েছে। পোশাক শিল্পের পথ ধরেই ওষুধ শিল্পও মন্দার দিকে ঝুঁকেছে।

  • পাট ও পাটজাত পণ্য: 'সোনালী আঁশ' খ্যাত পাট ও পাটজাত পণ্যও অর্থবছরের শুরুটা ইতিবাচক করলেও, গেল দুই মাস ধরে এই শিল্পের রপ্তানি আয় ক্রমশ মলিন হচ্ছে

মন্দার এই সামগ্রিক পরিস্থিতির মধ্যেও একটি খাত ব্যতিক্রমী ইতিবাচক ধারা বজায় রেখেছে। পরিবেশ দূষণের দায় বয়ে বেড়ানো সত্ত্বেও চামড়া ও চামড়াজাত শিল্প চলতি অর্থবছরের প্রতিটি মাসেই রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, তৈরি পোশাক শিল্পের এই পিছিয়ে পড়া অন্যান্য খাত খুব বেশি এগিয়ে নিতে পারবে না। এই মন্দার পেছনে প্রধানত দুটি কারণ কাজ করছে:

১. বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস (মার্কিন বাজারের চাপ)

বাংলাদেশী পণ্যের অন্যতম প্রধান গন্তব্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই দেশের ক্রেতারা বর্তমানে উর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির চাপে রয়েছেন, যা সরাসরি বাজার চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে। অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ হলো, যদি বৈশ্বিক বাজারে বিশেষ করে মার্কিন বাজারে চাহিদা কম থাকে, তবে তা বাংলাদেশের সামগ্রিক রপ্তানিতে একটি বড় প্রভাব ফেলবে।

২. অভ্যন্তরীণ প্রতিবন্ধকতা

বৈশ্বিক চাপের পাশাপাশি দেশীয়ভাবেও কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। রপ্তানি আয় বাড়ানোর জন্য নীরবচ্ছিন্ন উৎপাদন নিশ্চিত করা জরুরি, কিন্তু গ্যাস সরবরাহের মতো অভ্যন্তরীণ সুবিধাগুলো প্রত্যাশিত মাত্রায় নেই

তবে, অর্থনীতিবিদরা আশাবাদী যে মার্কিন ট্যারিফের কারণে বাংলাদেশ কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে এবং এর ফলে আগামী মাসগুলোতে হয়তো অর্ডার বাড়বে ও তার একটি প্রতিফলন দেখা যাবে। উল্লেখ্য, মার্কিন বাজারে পণ্য রপ্তানিতে নতুন শুল্ক কার্যকরের আগে গেল জুলাই মাসে প্রায় সব খাত উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখেছিল।

এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই আগামীতে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পের রপ্তানি আয় বাড়াতে হলে নীরবচ্ছিন্ন উৎপাদন নিশ্চিত করার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ গ্যাস সরবরাহসহ অন্যান্য সাপ্লাই চেইনের দুর্বলতা দূর করা জরুরি। বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির সময়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ইতিবাচক ধারা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে দ্রুত কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে হবে।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator