আওয়ামী লীগকে ‘শ্যাবি’ ও ‘শ্যালো’ পার্টি আখ্যা দিয়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ভদ্র রাজনীতির পরিবর্তে দেশে ফিরেছে পুরনো কদর্যতা।
আওয়ামী লীগকে কখনোই ‘ভদ্র মানুষের দল’ মনে হয়নি—এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। রাজধানীতে এক রাজনৈতিক আলোচনায় তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের আচরণ, ভাষা এবং অহংকার সব মিলিয়ে তাদের একটি ‘শ্যাবি’ ও ‘শ্যালো’ রাজনৈতিক দল বলেই মনে হয়।
রুমিন ফারহানা বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে গত ৫৩ বছরে অনেক কিছুই ঘটেছে, কিন্তু এমন ভয়াবহ মবোক্রেসি, সামাজিক স্তরে মব মানসিকতা এবং বিরোধী মতকে নিষ্ঠুরভাবে আক্রমণ করার সংস্কৃতি আমরা অতীতে কখনো দেখিনি। বিশেষ করে গত ১৫ বছর ছিল এক কালো অধ্যায়।
তিনি উল্লেখ করেন, “ফেসবুকের পোস্টে ‘রাজাকার শাবক’, ‘নাস্তিক’, ‘দেশদ্রোহী’ বলে বিরোধী মতকে আক্রমণ করা হয়েছে। ভিন্নমতের নারী হলে তার চরিত্র নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম, অভ্যুত্থানের পর একটা নতুন ধারার রাজনীতি শুরু হবে। কিন্তু এখনো দেখি সেই পুরনো ঘৃণার চর্চাই চলছে।
রুমিন বলেন, “যারা আজ ‘নতুন রাজনীতি’র কথা বলেন, তাদের মুখেও আমরা শুনছি সেই পুরনো কদর্য ভাষা। এটাই কী আমাদের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন ছিল? একজন রাজনীতিকের ভাষা কি এমন হওয়া উচিত?
তিনি আরও বলেন, “মিটফোর্ডে যে ঘটনা ঘটলো—ঢাকার কেন্দ্রস্থলে, আনসার ক্যাম্পের পাশে—সেখানে আনসার সদস্যরা সময়মতো উপস্থিত না হয়ে কেন নির্বিকার রইলেন? এটি অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।
“প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এখন এআই (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে,” বলেন রুমিন। “রাজনীতি যেন প্রতিশোধ ও চরিত্রহননের খেলা হয়ে গেছে। জামায়াতের হাতে যুবদলের বহিষ্কৃত নেতাকে রগ কেটে হত্যার ঘটনাও এই মবোক্রেসিরই অংশ। সে বিএনপির বহিষ্কৃত হলেও একজন নাগরিক। তার বিচার আদালতে হতে পারতো, হত্যা কেন?
নারী নিপীড়নের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গত নয় মাসে আমরা মাজারে হামলা, নাটক বন্ধ, মেয়েদের খেলা বন্ধসহ নারীর প্রতি সহিংসতা দেখেছি—কিন্তু বিচার দেখিনি। বরং যিনি নারীর ওপরে মোরাল পুলিসিং করছেন তাকেই আমরা মালা পরিয়ে মঞ্চে তুলছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যেসব রাজনৈতিক স্লোগানে অভ্যস্ত ছিলাম, তার ভাষাও এখন অনেক বেশি কদর্য হয়েছে। যেমন—তারেক রহমানকে নিয়ে বলা কিছু স্লোগান এমন, যা প্রকাশ্যে উচ্চারণ করাও লজ্জাজনক।
শেষে রুমিন বলেন, “আশা করেছিলাম, একটা পরিবর্তন আসবে। কিন্তু দেখছি, সেই পুরনো দলগুলোর মতোই নতুন দলগুলোর আচরণ। রাজনীতিতে সৌজন্য, শালীনতা আর মতপার্থক্যের সম্মান আজ যেন অতীত। যারা পরিবর্তনের কথা বলছে, তাদের উচিত রাজনৈতিক ভাষা ও আচরণে নিজেদের আলাদা প্রমাণ করা।