close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

আওয়ামী লীগের পথে হাঁটছে বিএনপি: চরমোনাই পীরের কঠোর সমালোচনা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Charmonai Pir Mufti Syed Faizul Karim claims BNP has abandoned Ziaur Rahman’s ideology and is now following Awami League’s path. He calls for a ballot battle against neo-fascists, extortionists, and o..

চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম অভিযোগ করেছেন, বিএনপি এখন আর জিয়াউর রহমানের আদর্শে নেই, বরং আওয়ামী লীগের পথেই হাঁটছে। তিনি ব্যালটের মাধ্যমে নব্য ফ্যাসিবাদ, চাঁদাবাজ ও জালিমদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়েখে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে বলেছেন, বর্তমান বিএনপি তাদের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। এক সময়ের বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক দলের রাজনৈতিক ধারা এখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কৌশলের সঙ্গে মিল রেখে এগোচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ যে সময়ে আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিত, আজ সেই একই স্লোগান বিএনপির মুখে শোনা যাচ্ছে। তার ভাষায়, “বিএনপির গায়ে এখন বহুল ছাল। তারা মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে বিভিন্ন পরগাছার মতো রাজনৈতিক আশ্রয়ে নির্ভর করছে।”

মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ৫ আগস্ট দেশে এক ফ্যাসিবাদ পতন ঘটেছে, কিন্তু যুদ্ধ এখানেই শেষ নয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই যুদ্ধ হবে ব্যালটের মাধ্যমে। তিনি স্পষ্ট করে জানান, এই লড়াই হবে নব্য ফ্যাসিবাদ, চাঁদাবাজ, ধর্ষক ও জালিমদের বিরুদ্ধে।

তার মতে, দেশের জনগণ এখন দুটি ভাগে বিভক্ত — একদল ইসলামপন্থী, আরেকদল সাধারণ। ইসলামী দলগুলোর জন্য তিনি একক ভোট বাক্সের আহ্বান জানান, যাতে আগামী বাংলাদেশকে ইসলামের বাংলাদেশে রূপান্তরিত করা যায়।

বিএনপির কিছু সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “একটি দল এখন হাদিয়া ও চাঁদা — দুটো বিষয়কে গুলিয়ে ফেলছে। হাদিয়া হলো মানুষের খুশি হয়ে দেওয়া অনুদান, আর চাঁদা হলো জোরপূর্বক আদায়। ইতিহাসে চাঁদা না দেওয়ার কারণে মানুষকে হত্যার নজির আছে, কিন্তু হাদিয়া না দিলে কাউকে কষ্টদায়ক কিছু বলা হয় না।

তিনি এই পার্থক্য বোঝাতে মুসলিম সমাজে প্রচলিত উদাহরণ তুলে ধরেন, যাতে জনগণ বিভ্রান্ত না হয়।

দৃঢ় কণ্ঠে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, “পিআর পদ্ধতির বাইরে জাতীয় নির্বাচন এ দেশের জনগণ কখনো মেনে নেবে না।” তিনি দাবি করেন, স্বাধীনতার পর থেকে সোনার বাংলা, ডিজিটাল বাংলা, স্মার্ট বাংলার মতো বহু স্লোগান শোনা গেছে, কিন্তু ইসলামিক মূল্যবোধে গড়া প্রকৃত বাংলাদেশ এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

তার মতে, আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ, যেখানে জনগণের অধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।

শুক্রবার বিকেলে ঝালকাঠির কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ইসলামী যুব আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চরমোনাই পীর। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঝালকাঠি-১ আসনের দলীয় প্রার্থী ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ আলআমিন, জেলা সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, জেলা জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. ফয়জুল হক এবং হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা আ. রহিম খান।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান।

বক্তৃতা শেষে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঝালকাঠি-২ আসনের দলীয় প্রার্থী ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে হাতপাখা প্রতীক তুলে দেওয়া হয়। এতে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ তাকে আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন এবং সমর্থন জানান।

চরমোনাই পীরের বক্তব্যে স্পষ্ট বার্তা উঠে এসেছে — দেশের রাজনীতিতে ইসলামী শক্তির ঐক্য ও ব্যালটের মাধ্যমে পরিবর্তন আনার প্রত্যয়। তার অভিযোগ, বিএনপি তাদের মূল আদর্শ থেকে সরে গিয়ে আওয়ামী লীগের ধারা অনুসরণ করছে, যা ইসলামী শক্তির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

No comments found