টকশোতে আব্দুন নূর তুষার বলেন, আওয়ামী লীগ ভুয়া নির্বাচন আয়োজন করে গণতন্ত্রকে অপমান করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার নির্বাচনব্যবস্থাকে বিকৃত করেছে, যা জনগণের আস্থা নষ্ট করেছে।
বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক আব্দুন নূর তুষার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী রাজনীতি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ধর্ষণ করেছে। তারা গণতন্ত্রকে বিকৃত করেছে এবং জনগণের আস্থা ধ্বংস করেছে।”
তুষার অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের আচরণ প্রমাণ করে যে, তারা শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নির্বাচনের নাম ব্যবহার করছে। তার ভাষায়, “আওয়ামী লীগ চাইলে জোর করে ক্ষমতায় থাকতে পারত, কিন্তু তারা ভুয়া নির্বাচন করেছে কারণ তারা ‘নির্বাচনের অভিনয়টা’ পছন্দ করে। নিজেদের গণতান্ত্রিক প্রমাণ করার জন্য বিরোধী দল সাজিয়ে, সিনেমার মতো একপক্ষীয় নির্বাচন আয়োজন করেছে।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বানচালের অভিযোগের নামে নানা নাটক সাজানো হচ্ছে। কেউ কেউ বলছে গেরিলা ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু এর কোনো প্রমাণ নেই। তুষারের দাবি, “প্রকৃত রাজনৈতিক দল কখনোই নির্বাচন ঠেকাতে চায় না, বরং অংশ নিতে চায়। ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করলে অকাট্য প্রমাণ দিতে হবে, নাহলে জনগণের মনে সন্দেহ জন্মাবে।”
আওয়ামী লীগের ভোটারদের প্রসঙ্গে তুষার বলেন, “আওয়ামী লীগের ভোটাররা যদি প্রকৃত অর্থে সুনাগরিক হন তবে তারা বিবেচনা করে ভোট দেবেন। একজন যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত হলে তিনি কেবল নিজের দলের নয়, বরং সবার প্রতিনিধি হবেন। এবার আওয়ামী লীগের ভোটাররাও সেই যোগ্য প্রার্থীর খোঁজ করবেন।”
তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের ভোটাররা ভোট দিতে অনাগ্রহ দেখিয়েছে। অনেক মেয়র নির্বাচন ও উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, নিজেদের দল নিয়েই ভোটারদের মধ্যে বিরক্তি তৈরি হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “আগের মতো ভোটাররা ভোট না দিলে আওয়ামী লীগের জন্য সংকট হবে, আবার হঠাৎ করে তারা ভোট দিতে বের হলে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।”
তুষার মনে করেন, আসলে আওয়ামী লীগ নিজেরাও নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তার বক্তব্য, “যদি আওয়ামী লীগ সত্যিকার অর্থে রাজনৈতিক দলের মতো নির্বাচনে অংশ নিতে চাইত, তাহলে আমরা এখন একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক পরিকল্পনা, কর্মসূচি এবং তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠিত করার উদ্যোগ দেখতে পেতাম। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রমাণ নেই।”
তুষারের মতে, এসব আচরণ শুধু প্রমাণ করে যে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের প্রতি আন্তরিক নয়। তারা জনসম্পৃক্ত রাজনীতিকে এড়িয়ে কেবল ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। আর এই কারণেই দেশ আজ গণতন্ত্রের গভীর সংকটে পড়ে গেছে।