close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

আওয়ামী লীগ না থাকলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা হারাবে : জয়

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Bangladeshi actor and host Shahriar Nazim Joy sparked debate on social media, claiming that the upcoming election will lose credibility if the Awami League is excluded.

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় লিখেছেন, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকলে সেটি গ্রহণযোগ্যতা হারাবে এবং দেশে আরও বিভক্তি তৈরি হবে।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় আবারও সামাজিক মাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছেন। সমসাময়িক নানা বিষয়ে খোলামেলা মতামত দেওয়ার জন্য বরাবরই আলোচিত জয় এবার রাজনীতি নিয়ে একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন নিজের ফেসবুক পেজে। বুধবার (২০ আগস্ট) প্রকাশিত সেই লেখায় তিনি স্পষ্ট মন্তব্য করেছেন—আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা হারাবে এবং দেশের রাজনৈতিক বিভক্তি আরও গভীর হবে।

জয় তার পোস্টে উল্লেখ করেন, বিদেশের মাটিতে নিরপেক্ষ আলোচনায় তিনি লক্ষ্য করেছেন, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে অনেকেই ইতিবাচকভাবে দেখছেন এবং বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চান। তবে তাদের দাবি, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে সেটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। কারণ আওয়ামী লীগের যতই সমালোচনা থাকুক না কেন, দেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী এখনো দলটির সমর্থক। তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচন আয়োজন করলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশে অস্থিতিশীলতা ও বিভক্তি আরও বাড়বে।

তার মতে, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন দলগুলো নিয়েও ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। তিনি লেখেন, “এনসিপি ও জামাতকে অন্তত ১০০ আসনে সংসদে দেখতে চাইছেন অনেকে। প্রবাসীরা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও তারা মনে করেন, ড. ইউনুস সরকারকে সময় দেওয়া উচিত। তবে জনসমর্থনের ঘাটতির কারণে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।”

সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গেও জয় তার বিশ্লেষণে দ্বিধা লক্ষ্য করেছেন। এনসিপি নিয়ে তিনি লেখেন, “মানুষের একাংশ মনে করে এত বড় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে এনসিপি, তাই তাদের যথাযথ মূল্যায়ন হওয়া উচিত। তবে অন্যরা তাদের আক্রমণাত্মক ভাষা ও কার্যকলাপ দেখে বিরক্ত। শুধু আওয়ামী লীগবিরোধী প্রচারণা করে সংসদে টিকে থাকা কঠিন হবে—এমন ধারণাও অনেকে পোষণ করছেন।”

জামাত সম্পর্কে জয় বলেন, “তাদের রাজনৈতিক ভূমিকা ও বক্তব্য অনেকেই প্রশংসা করছে। তবে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে এখনো মানুষের মনে বড় ধরনের বিভ্রান্তি রয়েছে। এর ফলাফল কী দাঁড়াবে তা সময়ই বলে দেবে।” বিএনপি প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, “দলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে অনেকে সন্তুষ্ট হলেও মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের কার্যকলাপে জনসাধারণ বিরক্ত। এটাই বিএনপির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।”

জয় আরও যোগ করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদিও বলেছেন প্রতিশোধ নয়, প্রতিরোধ নয়, তবুও মাঠপর্যায়ের কর্মীরা প্রতিশোধের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে। যা হাই কমান্ডের নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। তার প্রশ্ন, “নির্বাচনের আগেই যদি হাই কমান্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা করা হয়, তাহলে নির্বাচনে জয়ী হলে এই কর্মীরা কী ভূমিকা নেবে?

নিজের লেখার শেষাংশে জয় বিনয়ী ভঙ্গিতে উল্লেখ করেন, এটা কেবল আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ। আমি হয়তো খুব বড় কিছু বুঝি না, তবে নাগরিক হিসেবে মত প্রকাশের অধিকার আছে। যদি আমার কথায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন আমি ক্ষমাপ্রার্থী। তবে যারা বুদ্ধিমান, তারা হয়তো এই লেখার ভালো অংশগুলো গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে পারবেন।

জয়ের এই পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই তার বিশ্লেষণকে বাস্তবসম্মত বলেছেন, আবার কেউ কেউ তার বক্তব্যকে বিতর্কিত আখ্যা দিয়েছেন। তবে নিঃসন্দেহে এই পোস্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এদিকে অভিনয় জীবনে জয়ের কাজ নিয়েও দর্শকদের আগ্রহ রয়েছে। গেল ঈদে মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ পাপ কাহিনী-তে অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাণেও যুক্ত ছিলেন তিনি। রুনা খান, মৌসুমী মৌ এবং তানজিয়া মিথিলার মতো শিল্পীদের সঙ্গে তার অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

শাহরিয়ার নাজিম জয় রাজনীতিবিদ নন, কিন্তু তার পর্যবেক্ষণ ও মন্তব্যে স্পষ্ট যে তিনি সমাজ-রাজনীতির খুঁটিনাটি বিষয় নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করেন। নির্বাচনের আগে তার এই পোস্ট নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নতুন বার্তা বয়ে আনল।

No comments found