আন্দোলনে সমন্বয়কদের চেয়ে সাধারণ মানুষ বেশি সাহায্য করেছে : উমামা ফাতেমা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Umama Fatema, former spokesperson of the Anti-Discrimination Student Movement, stated that ordinary people helped the movement far more than its coordinators. She also alleged that some coordinators l..

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা দাবি করেছেন, আন্দোলনে সমন্বয়কদের চেয়ে সাধারণ মানুষ অনেক বেশি সহায়তা করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু সমন্বয়ক পরবর্তীতে চাঁদাবাজি ও দখল কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সমন্বয়কদের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। সোমবার গভীর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক সরাসরি সম্প্রচারে তিনি বলেন, "সমন্বয়ক টার্মটা আন্দোলনের সময় কিছুটা দরকার ছিল ঠিকই, কিন্তু বাস্তবে আমি তাদের কাছ থেকে কার্যকর কোনো সহায়তা পাইনি। বরং সাধারণ মানুষ ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।"

উমামা ফাতেমা বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসের সেই উত্তাল সময়গুলোতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ যে আগ্রহ ও উদ্দীপনায় আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন, তা ছিল সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত। তিনি বলেন, "একেকজন একেক জায়গা থেকে আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন, কেউ কারও নির্দেশনা ছাড়াই সংগঠিত হচ্ছেন। অথচ, সমন্বয়কদের তালিকায় থাকা অধিকাংশ মানুষকে আমি ৫ আগস্ট পর্যন্ত একবারও যোগাযোগ করতে পারিনি।"

তিনি জানান, প্রথমে ৫২ জন সমন্বয়ক ছিল, পরে সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ৬২ এবং এক পর্যায়ে ১৫৮ জন পর্যন্ত। "কিন্তু তারা কতটা কাজ করেছে সেটি বড় প্রশ্ন। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয়ের চেয়ে বিভ্রান্তি ছিল বেশি।"— বলেন উমামা।

ফেসবুক লাইভে উমামা অভিযোগ করেন, "৫ আগস্টের পরদিন থেকেই সমন্বয়কের পরিচয় দিয়ে কেউ কেউ বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করে। এক জায়গায় গিয়ে দখল করছে, আরেক জায়গায় গিয়ে চাঁদা আদায় করছে। কিছু কিছু দৃশ্য দেখে আমার মনে হচ্ছিল, যেন সমন্বয়কের নামে একটা নতুন ‘রক্ষীবাহিনী’ তৈরি হচ্ছে।"

তিনি আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বিখ্যাত উপন্যাস 'খোঁয়ারি'র উদাহরণ টেনে বলেন, “রক্ষীবাহিনী যেমন জায়গায় জায়গায় গিয়ে দখল করত, এখানেও সমন্বয়কের ছদ্মাবরণে সেই একই কৌশল দেখা যাচ্ছে।”

উমামা আরও বলেন, “গতকাল পর্যন্ত কেউ সমন্বয়ক হতে চাচ্ছিল না, অথচ আজ সবাই সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই পরিবর্তন কীভাবে ঘটল? সাধারণ মানুষের আবেগের উপর ভর করে যারা সুযোগ নিচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করা দরকার।”

তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, এই আন্দোলন ছিল জনগণের, কোনো গোষ্ঠী বা নেতৃত্বকেন্দ্রিক নয়। “যখন আমি বিপদে পড়েছি, তখন আমাকে সাধারণ মানুষ সাহায্য করেছে, সমন্বয়কের তালিকায় থাকা লোকদের অনেককেই তখন খুঁজে পাইনি।”

তিনি আরও বলেন, আন্দোলন কখনোই শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বের দোহাই দিয়ে দখলদারিত্ব ও সুবিধাবাদীদের জায়গা করে দেয় না। “এই আন্দোলন ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে, কিন্তু সেই ইতিহাসে কারা ভূমিকা রেখেছে, আর কারা সুযোগ নিয়েছে— সেটাও মানুষ মনে রাখবে।”

Hiçbir yorum bulunamadı