শায়েখে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনের ত্যাগ ও আন্দোলন ছাড়া বিএনপি নেত্রী বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ কিংবা তারেক জিয়ার দেশে ফেরার স্বপ্নও সম্ভব হতো না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়েখে চরমোনাই) বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “বিএনপির জন্য করুণা হয়! যাদের তোমরা উপেক্ষা করো, যাদের সমালোচনা করো, সেই তারাই তোমাদের জন্য এমন সুযোগ তৈরি করেছে যে আজ তারেক জিয়া দেশে ফেরার স্বপ্ন দেখতে পারছে। আজ তোমাদের নেত্রী বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারছে। যদি তারা জীবন বিপন্ন করে আন্দোলনে না নামতো, তাহলে তোমরা এসব কিছুই করতে পারতে না।”
গত মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণসমাবেশটি আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা কমিটি। সমাবেশের মূল দাবি ছিল— জুলাই মাসের গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, এবং সংখ্যানুপাতিক (পি.আর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা শাখার সভাপতি প্রভাষক হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (মোমেনশাহী বিভাগ) জি.এম রুহুল আমীন, জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আজিজুর রহমান জার্মানি, এবং কিশোরগঞ্জ জেলা সদর দ্বীনি সংগঠক মাওলানা শফিকুল ইসলাম ফারুকী। এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অসংখ্য নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।
শায়েখে চরমোনাই বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, “আজ খোলা আকাশের নিচে মাঠে রাজনীতি করার সুযোগ তোমরা পেয়েছো কেবল তাদের ত্যাগ ও সংগ্রামের কারণে, যারা নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলনে নেমেছিল।”
তিনি জনগণের উদ্দেশে দলীয় প্রতীক হাতপাখায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “নির্বাচনে সবাইকে পরীক্ষা করেছেন— আওয়ামী লীগ ফেল, বিএনপি ফেল, জাতীয় পার্টিও ফেল। একবার হাতপাখাকে সুযোগ দিন; যদি আমরাও ফেল করি, কোনো দিন ভোট চাইতে আসব না।”
এর আগে দুপুর থেকেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে জমায়েত হতে শুরু করেন। অঙ্গসংগঠনের খণ্ড খণ্ড মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে সমাবেশ স্থলে গিয়ে একত্রিত হয়।
গণসমাবেশ শেষে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়, যেখানে হাতপাখায় ভোট দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়।