বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে আল্লাহ ছাড়া কেউ ধানের শীষকে রুখতে পারবে না। জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ক্ষমতাসীনদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, যদি দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে আল্লাহ ছাড়া কেউ ধানের শীষকে রুখতে পারবে না। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ কর্মজীবী দল আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “যারা বুকের রক্ত দিয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হলে দেশের মানুষ তা প্রতিরোধ করবে। এই দেশ এখন জনগণের, আর এটি কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি নয়। আমাদের ভোট আমরা নিজেরাই দেব। এই ভোটের জন্য আমরা ত্যাগ স্বীকার করেছি, রক্ত দিয়েছি। ১৬ বছর অপেক্ষার পর জনগণ ভোটাধিকার ফিরে পেতে প্রস্তুত। এখন যদি কেউ সেই ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, তার জবাব জনগণ নিজেরাই দেবে।”
জয়নুল আবদিন ফারুক আরও বলেন, “ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য মানুষ দীর্ঘদিন অপেক্ষা করছে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধীরা এখন ষড়যন্ত্র করে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতিতে ভোট চাইছে। ড. ইউনূস বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ব্যক্তি, কিন্তু যদি তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হন, তবে তার নাম ইতিহাসে কলঙ্কজনকভাবে লেখা থাকবে।”
তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্বাচন নিয়ে কেউ যদি ষড়যন্ত্র করে, বিএনপি নয়—জনগণ নিজেরাই তাদের প্রতিহত করবে। “৫ আগস্ট দেশের ছাত্র ও জনতা জীবন দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে কেউ যদি ভোট নিয়ে কারসাজি করতে চায়, জনগণ তা প্রতিহত করবে।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফারুক বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ট্রেন ইতোমধ্যে চালু হয়ে গেছে। মানুষের সমর্থন পেতে হলে আপনাদের গ্রামে গিয়ে বয়োজ্যেষ্ঠদের সম্মান করতে হবে, যারা অত্যাচার করে তাদের প্রতিহত করতে হবে। পদ লোভ নয়, বরং দলকে ভালোবাসুন।”
তিনি সরকারের অতীত কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, “এই দেশে পিআর, ইভিএম কিছুই টেকেনি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে লুটপাট করেছেন, প্রতিবেশী দেশকে সব দিয়ে দিয়েছেন। এখন সেখানেই ভালোবেসে চলে গেছেন। ভালোবাসা নিয়ে সেখানে থাকুন, কিন্তু উসকানি বন্ধ করুন। আপনার ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের মানুষ প্রস্তুত।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি আলী হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আলতাব হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মাইনুল ইসলামসহ আরও অনেকে।