নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হবে ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা। এ সংক্রান্ত চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব মো. মাহবুব আলম শাহ।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশন জানায়, আসন্ন ভোটকে ঘিরে নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে।
বুধবার কমিশনের উপসচিব মো. মাহবুব আলম শাহ স্বাক্ষরিত একটি অফিসিয়াল চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ খসড়া তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে নির্বাচনী কার্যক্রমে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত হলো। কারণ ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ প্রক্রিয়া নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশের পর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কৌশল চূড়ান্ত করতে পারবে। প্রার্থীরা কোন এলাকায় কতগুলো ভোটকেন্দ্র থাকবে, কীভাবে প্রচারণা চালাতে হবে এবং কোথায় পর্যবেক্ষণ বাড়াতে হবে—এসব বিষয়ে এখন থেকে পরিকল্পনা শুরু করতে পারবেন।
এর আগে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করেছে। এবার ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে প্রক্রিয়ার আরেকটি ধাপ পূর্ণ হলো। কমিশন জানিয়েছে, খসড়া প্রকাশের পর আপত্তি ও পরামর্শ গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হবে। সেই সময়ের মধ্যে কেউ যদি কেন্দ্র পরিবর্তন বা সংশোধনের আবেদন করতে চান, তবে তা লিখিতভাবে কমিশনে জানাতে পারবেন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, খসড়া তালিকায় দেশের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় মোট কতগুলো ভোটকেন্দ্র থাকবে, কোথায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে, কেন্দ্রের অবকাঠামো কেমন—এসব তথ্য প্রকাশ করা হবে। এই তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে ভোটাররা আগেভাগেই বুঝতে পারবেন তারা কোন কেন্দ্রে ভোট দেবেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সময়মতো ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ নির্বাচনকে স্বচ্ছ করার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এতে ভোটারদের আস্থা বাড়বে এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও একটি ইতিবাচক বার্তা যাবে যে, বাংলাদেশ ধাপে ধাপে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পথে অগ্রসর হচ্ছে।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলো ইতিমধ্যেই মাঠে সক্রিয় হতে শুরু করেছে। নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল তৈরিতে তারা খসড়া তালিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। অনেক প্রার্থীই মনে করছেন, কেন্দ্রভিত্তিক ভোটের পূর্বাভাস এবং প্রচারণার ধরন এই তালিকার ওপর নির্ভর করবে।
উল্লেখ্য, চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হবে খসড়ার ওপর আপত্তি নিষ্পত্তি করার পর। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে প্রয়োজনীয় সময় নেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করা হবে।
জনগণও এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। কারণ ভোটকেন্দ্রের অবস্থান আগে থেকেই জানলে সাধারণ ভোটারদের ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ হবে। অনেকেই মনে করছেন, এ ধরণের আগাম ঘোষণা ভোটারদের আস্থা ফেরাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
নির্বাচন কমিশন এবার বারবার জোর দিচ্ছে, ভোট যেন হয় সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক। ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ সেই প্রতিশ্রুতিরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের ঘোষণার দিকে তাই এখন পুরো দেশের চোখ।