আলোচিত-সমালোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি ফের আলোচনায়। বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর শুধু তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলা নয়, বরং নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে তার গত বছরের একটি পুরনো ফেসবুক পোস্ট। বিশেষ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে দেওয়া সেই পোস্ট এখন আবার ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
রবিবার (২৪ আগস্ট) বিশেষ অভিযানে বরিশাল থেকে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। জানা গেছে, চলতি জুলাই মাসের হত্যা মামলার সূত্র ধরে তাকে আটক করা হয়। এর পর থেকেই তাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
২০২৪ সালের ১৭ জুলাই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টে আবু সাঈদকে নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন তৌহিদ আফ্রিদি। সে পোস্টে তিনি শেয়ার করেছিলেন পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার আগে আবু সাঈদের দু’হাত প্রসারিত অবস্থার একটি ভাইরাল ছবি। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন— “আমি দেখিনি ভাষা আন্দোলনের সালাম রফিক, কিন্তু আমি দেখেছি আবু সাঈদ ভাইকে।” এই স্ট্যাটাসটি সেই সময় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল, আর এবার তার গ্রেপ্তারের পর আবারো সামনে এসেছে।
অন্যদিকে, জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ) সম্প্রতি দাবি তুলেছিল যে, তৌহিদ আফ্রিদিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। সংগঠনটির দাবি ছিল, তিনি শুধু বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার সঙ্গে জড়িত নন, বরং ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্যাম্পেইনের সময়ও অর্থ সরবরাহ করেছিলেন। সরকারের প্রতি দেওয়া তাদের আলটিমেটামের কিছুদিন পরই গ্রেপ্তার হলেন আফ্রিদি।
এদিকে এর আগেও তৌহিদ আফ্রিদির পরিবারের নাম এসেছে আলোচনায়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দায়ের করা হত্যা মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন তার বাবা, মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলায় নাসির উদ্দিন সাথী ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদিকে আসামি করা হয়।
ওই মামলায় প্রধান আসামি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসামির তালিকায় দ্বিতীয় নাম সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তৃতীয় নাম সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন। সেখানে ১১তম আসামি তৌহিদ আফ্রিদি এবং ২২তম আসামি তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথী। এ মামলায় মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বর্তমানে তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেপ্তারকে ঘিরে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একদিকে অনেকেই তাকে অভিযুক্তদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছেন, অন্যদিকে তার সমর্থকরা দাবি করছেন, তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে টার্গেট করা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে আবু সাঈদকে নিয়ে দেওয়া তার সেই পুরনো স্ট্যাটাস, যা আবারও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।