আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের হত্যা মামলায় আজ ট্রাইব্যুনালে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়। এই মর্মান্তিক দৃশ্যের সময় আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বারবার চোখের জল মুছতে থাকেন। প্রসিকিউসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল আগামীকাল থেকে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।
৩০ জুলাই প্রসিকিউসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের জন্য আবেদন করা হয়। আসামী পক্ষ থেকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়, কিন্তু ৬ আগস্ট আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের দিন নির্ধারণ করে। এই মামলায় অভিযুক্ত ৩০ জনের মধ্যে ছয়জন আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেলসহ আরও চারজন।
আবু সাঈদকে ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গুলিবিদ্ধ করা হয়, যা সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই হত্যাকাণ্ড আরও আলোচনায় আসে। এতে সারা দেশে ছাত্র জনতার মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
আন্দোলনের তীব্রতায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগও উঠেছে, যা বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং দেশের সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপরও তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলছে।