পিরোজপুরে বিএনপির এক সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতা কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু বলেছেন, ১৯৭১ সালের অপরাধের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, নইলে আপনাদেরকেও পাঠানো হবে পাকিস্তানে।
পিরোজপুরে অনুষ্ঠিত স্বরূপকাঠী পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তীব্র রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক এবং পিরোজপুর জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মো. কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালে যারা অপরাধ করেছে, তাদের সেই অপরাধের জন্য জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায়, যেমন আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছে, তেমনি তাদেরও পাঠিয়ে দেওয়া হবে পাকিস্তানে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে নেছারাবাদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে টিপু বলেন, দেশের একটি দল ইসলামের পোশাক পরে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কোরআন-হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের মন ও চিন্তাধারা বিকৃত করার অপচেষ্টা চলছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এ দেশের মানুষ এ ধরনের অপপ্রচার কখনোই মেনে নেবে না।
তিনি আরও বলেন, গত সতেরো বছর ধরে আওয়ামী লীগ একতরফা ক্ষমতা ধরে রাখতে দমন-পীড়ন, খুন, গুম এবং মিথ্যা মামলা করেছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এই ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে ও বৈষম্যের অবসান ঘটাতে বিএনপি দীর্ঘ আন্দোলন করেছে। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে ‘খুনি হাসিনা’ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
টিপু অভিযোগ করেন, একটি দল নির্বাচনের নামে ‘পিআর’ চালিয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। তবে এ দেশের মানুষ তাদের এসব পরিকল্পনা সফল হতে দেবে না। তিনি ঘোষণা দেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তাই সকল নেতাকর্মীকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, “আমরা কোরআন-হাদিসের আলোকে মানুষের জন্য রাজনীতি করি। যারা কোরআন-হাদিস ভেঙে ভুল ব্যাখ্যা দেয়, তাদের স্থান স্বাধীন বাংলাদেশে নেই। আমরা কোনো জঙ্গিবাদ মেনে নেব না, আর হাসিনা মার্কা নির্বাচনও মেনে নেওয়া হবে না।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন স্বরূপকাঠী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. শফিকুল ইসলাম ফরিদ। সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব মো. কাজী কামাল। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. ওয়াহিদুজ্জামান লাভলু।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এলিজা জামান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ রিয়াজ উদ্দিন রানা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আকন, নজরুল ইসলাম খান, সাইদুল ইসলাম কিসমতসহ অন্যান্য জেলা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে নেতারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।