ড. আব্দুল মঈন খান অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে শেখ পরিবার দেশ থেকে অর্থ পাচার ও লুটপাট চালিয়েছে এবং গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, বিএনপি সরকার গঠন করলে দুর্নীতিবাজদের ছাড় দেওয়া হবে না।
রূপগঞ্জ, ৯ আগস্ট — বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, “ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে, কারণ ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।” তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ তাদের দীর্ঘদিনের কুকর্ম ও অনিয়মের কারণে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তবুও দলটি কোনো অনুশোচনা না করে পরাশক্তির সহায়তায় আবার ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছে। তার ভাষায়, এ স্বপ্ন কখনোই বাস্তবে রূপ নেবে না।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ অডিটোরিয়ামে বিএনপির প্রয়াত নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মতিন চৌধুরীর ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ড. মঈন খান বলেন, “আধুনিক রূপগঞ্জ ও পূর্বাচল উপ-শহরের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন আব্দুল মতিন চৌধুরী। একসময় রূপগঞ্জের মানুষ পূর্বাচল প্রকল্পের বিরোধিতা করলেও বর্তমানে ওই এলাকা ঘিরেই ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। অথচ দুঃখজনকভাবে রূপগঞ্জের কোনো স্থাপনায় তার নাম বা স্মৃতিচিহ্ন নেই।”
তিনি অভিযোগ করেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে শেখ পরিবার দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার ও লুটপাট চালিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়নের পরিবর্তে তারা পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দেশের গণতন্ত্র হরণ করেছে।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, “আগামী নির্বাচনে আমরা একটি প্রকৃত জনভিত্তিক সরকার গঠন করব, যা মানুষের অধিকার নিশ্চিত করবে। বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আমরা ধৈর্য, সহনশীলতা এবং রাজনৈতিক সহাবস্থানের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই।”
তিনি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, বিএনপি সরকার গঠন করলে কোনো ধরনের অন্যায়, দুর্নীতি বা অপরাধের সঙ্গে আপস করা হবে না। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম ইমন।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, জেলা কৃষক দলের সভাপতি শাহিন মিয়া, সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হামিদুল হক খান, তারাব পৌর যুবদলের সদস্য সচিব কাজী আহাদ, ছাত্রদল নেতা আবু মোহাম্মদ মাসুম, সুলতান মাহমুদ ও কাঞ্চন পৌর যুবদল নেতা সানাউল্লাহ মান্নান সানি প্রমুখ।
ড. মঈন খানের বক্তব্যে স্পষ্ট বার্তা ছিল—দুর্নীতি ও লুটপাটের দায় ইতিহাস কখনো ভুলে না, আর নতুন প্রজন্মের দায়িত্ব হলো সেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও ন্যায্য বাংলাদেশ গড়ে তোলা।