close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

৬০ লাখ টাকার ব্যাগ সেনাবাহিনীর কাছে দিল শিক্ষার্থীরা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
A group of students recovered a bag containing approximately 60 lakh Taka from being looted at the Jatiya Sangsad Bhaban area. Demonstrating honesty and responsibility, they quickly handed over the ca..

জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে লুটপাটের চেষ্টার সময় বিপুল পরিমাণ টাকাসহ একটি ব্যাগ উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা। সততা ও দায়িত্ববোধের নজির স্থাপন করে আনুমানিক ৬০ লাখ টাকাভর্তি সেই ব্যাগ তারা দ্রুত সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছেন।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং লুটপাটের চেষ্টার মধ্যে একদল শিক্ষার্থী সততা ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে লুট হয়ে যাওয়া বিপুল পরিমাণ টাকাভর্তি একটি ব্যাগ তারা উদ্ধার করেন এবং কোনো লোভের বশবর্তী না হয়ে তা দ্রুত কর্তব্যরত সেনা সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেন।

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে যখন গণভবন এলাকা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং কোনো ধরনের প্রোটোকল না থাকার কারণে সেখানে বিশৃঙ্খলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এই সুযোগে কিছু লোক টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নেওয়ার চেষ্টা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক ব্যক্তি একটি বড় টাকার ব্যাগ নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ব্যাগটি টাকা ও মূল্যবান সামগ্রীতে পরিপূর্ণ ছিল। এ সময় কয়েকজন যুবক শিক্ষার্থী সেই ব্যক্তিকে আটক করেন এবং ব্যাগটি উদ্ধার করেন।

টাকা উদ্ধারের সঙ্গে জড়িত একজন শিক্ষার্থী, মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, যিনি শেখ বোরহান পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র, জানান যে তারা ব্যাগটি উদ্ধার করার পর এটিকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে সংরক্ষণের জন্য সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেন।

উদ্ধারকৃত টাকার পরিমাণ সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা হিসাব করে জানিয়েছেন, ব্যাগটিতে আনুমানিক ৫০ লাখ প্লাস (৬০ লাখের কাছাকাছি) টাকা ছিল। এই টাকার মধ্যে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের পাশাপাশি ডলার এবং কিছু ইমিটেশন গয়নাও ছিল বলে তারা নিশ্চিত করেন।

আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, ভবনের অভ্যন্তরে যেখানে ব্যাগ ভর্তি টাকা ছিল, সেখানে একজন মোটা লোক এটি নিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করছিলেন। শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই ব্যাগটি ধরে ফেলেন।

সেনা সদস্যদের কাছে হস্তান্তরের সময় একজন শিক্ষার্থী আর্জি জানান যে, ছাত্র আন্দোলনে যারা মারা গেছেন, এই টাকাগুলা যেন তাদের পরিবারের কিছুটা হলেও হস্তান্তর করা হয়। সেনা সদস্যরা, বিশেষত মেজর ইকবাল স্যার (যার নাম শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন), তাদের আশ্বস্ত করেন যে এই টাকা সঠিক জায়গায় কাজে লাগানো হবে। সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের এমন সততা ও দায়িত্বশীলতার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং তাদের ফোন নম্বর ও ছবি সংগ্রহ করে রাখেন।

অন্যান্য ভলান্টিয়ার শিক্ষার্থীরা জানান যে, শুধু টাকাই নয়, অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্রও উদ্ধার করে তারা জরুরি বিভাগের দুটি রুমে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। তারা সেনাবাহিনীর নির্দেশ অনুযায়ী, ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন, যাতে সেনা সদস্যরা এসে এই বাকি সম্পদও উদ্ধার করতে পারে।

এই শিক্ষার্থীরা মূলত দেশের সম্পদ রক্ষায় এক সাহসী ও প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছেন। এমন পরিস্থিতিতে লোভকে সংবরণ করে দেশ ও জনগণের প্রতি তাদের এই কর্তব্যপরায়ণতা দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।


এই শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক সততা ও সাহসিকতা প্রমাণ করে যে, নৈতিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী তরুণরাই একটি জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ এবং দেশের ক্রান্তিকালে তারাই সবচেয়ে বড় ভরসা।

No comments found


News Card Generator