অবশেষে জাতীয় সনদের দিকে এগোচ্ছে সংলাপ। অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানালেন, ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে যেকোনোভাবে মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে সনদ চূড়ান্ত করতে হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ রবিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে স্পষ্টভাবে জানান, একটি জাতীয় সনদ গঠনের জন্য ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে যেকোনো প্রক্রিয়ায় মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। তার ভাষায়, প্রয়োজনে বড়জোর ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় নেয়া যেতে পারে, তবে তার বাইরে যাওয়া যাবে না।
এই সংলাপটি ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত ধারাবাহিক আলোচনার ১২তম দিনের আলোচনা। আলোচনার সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি, জুলাই মাস শেষ হওয়ার আগেই একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছাতে। কারণ, এটি কেবল রাজনৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শহীদদের প্রতি আমাদের সম্মান প্রদর্শনের একটি মাধ্যমও।
এদিনের আলোচ্য সূচিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল:
-
জরুরি অবস্থা ঘোষণা
-
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ
-
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা
অধ্যাপক রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রশংসা করে বলেন, “আপনারা যেভাবে প্রতিদিন আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন, তা স্পষ্ট করে দেয় আপনারা সত্যিই বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কারে আগ্রহী এবং ভবিষ্যৎ গঠন নিয়ে আন্তরিক।”
তিনি আরও বলেন, “এই প্রক্রিয়াটি যদি বিলম্বিত হয়, তবে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও আসন্ন নির্বাচনী প্রস্তুতির ওপর। আমরা চাই না কোনোভাবেই এমন সংকটে পড়ুক দেশ। এজন্য মৌলিক বিষয়ে দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে।”
আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত বিষয়ে ইতোমধ্যে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মাঝে ঘনিষ্ঠ মতৈক্য গড়ে উঠেছে। তার প্রত্যাশা, আজকের আলোচনায় এ দুটি বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব। এর ফলে জাতীয় সনদের রূপরেখা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
তিনি দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন, জাতীয় সনদ কেবল একটি দল বা কমিশনের উদ্যোগ নয়, এটি সকল নাগরিক, সব রাজনৈতিক শক্তি ও সমাজের প্রতি আমাদের যৌথ দায়িত্ব।
এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, একটি গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এই লক্ষ্য সফল করতে হলে জুলাই মাসের মধ্যেই সংলাপ ও সমঝোতার চূড়ান্ত রূপ দিতে হবে।