জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ৩০টি বিষয়ে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি চলছে। গাজীপুর ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই প্রোগ্রামে গবেষণার আবেদন নেওয়া হবে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা ১৮ নভেম্বর, আর কোর্সওয়ার্ক শুরু ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ৩০টি বিষয়ে পূর্ণকালীন এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে গবেষক ভর্তির আবেদন চলছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশীয় উন্নয়ন, মুক্তিযুদ্ধ, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সামাজিক পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর গবেষণাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগ্রহী আবেদনকারীদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন গেটওয়ে থেকে নির্ধারিত পে-স্লিপ ডাউনলোড করে আবেদন ফি জমা দিতে হবে। এমফিল প্রার্থীদের ফি ১,৫০০ টাকা এবং পিএইচডি প্রার্থীদের ২,০০০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। সোনালী সেবার মাধ্যমে ফি জমা দেওয়ার পর আবেদন ফরম পূরণ করে ৫ নভেম্বরের মধ্যে এর প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে হবে। তবে যারা ইতোমধ্যে আবেদন সম্পন্ন করে ফি জমা দিয়েছেন, তাদের নতুন করে আবেদন করতে হবে না।
বর্ধিত সময়সূচি অনুযায়ী, লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৮ নভেম্বর, ফলাফল প্রকাশিত হবে ২৫ নভেম্বর, আর মৌখিক পরীক্ষা (সাক্ষাৎকার) নেওয়া হবে ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে ৯ ডিসেম্বর, এবং ভর্তি কার্যক্রম চলবে ১১ থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামের কোর্সওয়ার্ক ও গবেষণা কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে।
ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এবং আবেদন ফরম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (www.nu.ac.bd/admissions) পাওয়া যাবে। এছাড়া প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট একাডেমিক কমিটির চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, গবেষণার বিষয় নির্ধারণে দেশের সামাজিক চাহিদা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং শিক্ষাক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জগুলোকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও আধুনিক প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়েও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা:
এমফিল প্রোগ্রামে ভর্তি হতে প্রার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ বা জিপিএ ২.৭৫ থাকতে হবে। স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় আলাদাভাবে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর বা সিজিপিএ ২.৫০ থাকতে হবে। তিন বছর মেয়াদি স্নাতক (পাস) ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫৫ শতাংশ নম্বর বা সিজিপিএ ২.৭৫ থাকা বাধ্যতামূলক। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে আবেদন করতে হলে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর বা সিজিপিএ ২.৫০ প্রয়োজন।
পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা ইউজিসি অনুমোদিত অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের সিজিপিএ কমপক্ষে ৩.০০ এবং অন্তত একটি গবেষণামূলক প্রকাশনা থাকতে হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষকরা যদি স্নাতক ও স্নাতকোত্তরসহ অন্তত তিনটি প্রথম বিভাগ বা সিজিপিএ ৩.০০, তিন বছরের শিক্ষকতা অভিজ্ঞতা এবং একটি স্বীকৃত গবেষণাপত্র প্রকাশ করে থাকেন, তারা সরাসরি পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন।
এই প্রোগ্রামটি দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা খাতের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের গবেষকরা দেশীয় বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নতুন জ্ঞান ও সমাধান উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন।