আগামী জাতীয় নির্বাচনে তরুণদের জন্য আলাদা বুথ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে ১৬ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত, মোতায়েন হবে ৮ লাখ নিরাপত্তাকর্মী।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৮ থেকে ৩২ বছর বয়সী তরুণ ভোটারদের জন্য রাখা হবে আলাদা ভোটিং বুথ। এমনই এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এই পদক্ষেপ তরুণদের ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ১৮-৩২ বছর বয়সী ভোটারদের আলাদা তালিকা তৈরি ও তাদের জন্য পৃথক বুথ নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন।” এই উদ্যোগের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ আরও যুববান্ধব হবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ সময় তিনি আরও জানান, নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। রমজানের আগেই নির্বাচন হতে পারে, যদি নির্বাচনী সংস্কার ও অন্যান্য প্রস্তুতি যথাসময়ে সম্পন্ন হয়। প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলা প্রস্তুতি সম্পন্নের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
নির্বাচনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রেস সচিব বলেন, “১৬ হাজার ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রের জন্য বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৮ লাখ সদস্য মোতায়েন করা হবে। পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য চলবে ইনটেনসিভ প্রশিক্ষণ।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগামী কয়েক মাস আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে সিসি ক্যামেরা এবং কঠোর মনিটরিং। ভোটের দিন ইন্টারনেট সচল থাকবে নিশ্চিতভাবেই, যাতে কোনও প্রকার বিভ্রান্তি বা অস্বচ্ছতা না থাকে।
ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। তিনি জানান, আগের তিনটি নির্বাচনে যারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বাদ দিয়ে এবার নতুন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এক থানার পুলিশ অন্য থানায় দায়িত্ব পালন করবে, যেন নিরপেক্ষতা বজায় থাকে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এবার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ সদস্যরা বডি ক্যামেরা পরিধান করবেন। এর মাধ্যমে যে কোনো অনিয়ম সহজেই শনাক্ত এবং নথিভুক্ত করা সম্ভব হবে।
সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন চাইছে, এক স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে। তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা বুথের সিদ্ধান্ত সেই লক্ষ্য পূরণে এক সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।