১৫ আগস্টে কোনো শোক মিছিল করতে দেওয়া হবে না: পিনাকী ভট্টাচার্য..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Writer and activist Pinaki Bhattacharya has issued a stern warning against organizing mourning processions on August 15, vowing to resist any gatherings at Dhanmondi 32 with full force.

লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য ১৫ আগস্টে শোক মিছিলের আয়োজনের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ধানমণ্ডি ৩২-এ যেকোনো ধরনের সমাবেশ ঠেকাতে সর্বশক্তি প্রয়োগের বার্তা দিয়েছেন তিনি।

১৫ আগস্টে শোক মিছিল আয়োজনের সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সতর্কবার্তা দিয়েছেন। শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি স্পষ্ট করে জানান, এই দিনে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে কোনো ধরনের মিছিল বা সমাবেশের প্রচেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।

তার পোস্টে পিনাকী লেখেন— “১৫ আগস্টে কোনো শোক মিছিল করতে দেওয়া হবে না। ধানমণ্ডি ৩২ নাম্বার অভিমুখে যেই মহাপুরুষই আসুক বা আসার চেষ্টা করুক, পরিণতি ভালো হবে না। মাইন্ড ইট। ঢাকা শহরকে আরেকটা যুদ্ধক্ষেত্র বানাইয়েন না। মেহেরবানি করে।”

এতেই থেমে থাকেননি তিনি। পরবর্তী অংশে পিনাকী আরও জোর দিয়ে লেখেন, “মনে রাখবেন ধানমণ্ডি ৩২ নাম্বার ফ্যাসিবাদের তীর্থস্থান। ফ্যাসিবাদের তীর্থস্থানের যেকোনো গ্লোরিফিকেশনের প্রচেষ্টাকে সর্বশক্তি দিয়ে জনগণ রুখে দেবে। কোনো কন্সিকুয়েন্সের কথা চিন্তা না করেই। ইনকিলাব আভিতক জিন্দা হ্যায়।”

পিনাকীর এই পোস্ট দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনা তৈরি করে। বিশেষত ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আগে থেকেই বিরাজমান থাকায় তার এই বক্তব্য নতুন করে তর্ক-বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য নির্মমভাবে নিহত হন। দিনটিকে সরকারি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শোক দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। তবে এ বছর সামাজিক মাধ্যমে একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয় যে, ‘৭১ মঞ্চ’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে কয়েকজন ব্যক্তি ১৫ আগস্টে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।

এই গুঞ্জনের মধ্যেই পিনাকীর এমন সতর্কবার্তা আসে, যা স্পষ্টতই নির্দেশ করছে যে তিনি এই ধরনের যেকোনো উদ্যোগকে জনগণের প্রতিরোধের মুখে ফেলতে চান। তার ভাষায়, ধানমণ্ডি ৩২ “ফ্যাসিবাদের তীর্থস্থান” — এবং এই স্থানকে ঘিরে কোনো ধরণের গৌরব প্রদর্শনের প্রচেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের প্রকাশ্য সতর্কবার্তা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। বিশেষ করে ১৫ আগস্টের মতো ঐতিহাসিক ও সংবেদনশীল দিনে সামাজিক ও রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

এছাড়া, পিনাকীর বক্তব্যে যে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ প্রসঙ্গ এসেছে, তা নিয়ে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, যদি ধানমণ্ডি ৩২ অভিমুখে কোনো মিছিল বা সমাবেশের চেষ্টা হয়, তাহলে তা সরাসরি সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে সমর্থন ও বিরোধিতা—দুই ধরনের প্রতিক্রিয়াই দেখা গেছে। তার সমর্থকরা মনে করেন, এটি “স্বৈরাচারের প্রতীকী স্থানে” যেকোনো শোক প্রদর্শনের মাধ্যমে রাজনৈতিক বৈধতা দেওয়ার প্রচেষ্টা প্রতিহত করার একটি সঠিক বার্তা। অন্যদিকে, বিরোধীরা বলছেন, মুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কেউ শোক পালন করতে চাইলে তা বন্ধ করার হুমকি দেওয়া মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।

যদিও এখনো সরকারি কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ১৫ আগস্ট ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অতিরিক্ত সতর্ক থাকবে এবং ধানমণ্ডি ৩২ এর আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

সামগ্রিকভাবে, পিনাকী ভট্টাচার্যের এই বার্তা শুধু সামাজিক মাধ্যমে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রভাব ফেলছে। ১৫ আগস্ট ঘিরে কী ঘটবে, তা এখন দেশের অনেকের নজরে।

No comments found