১৫ আগস্টকে ঘিরে খুলনায় ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। রাতের আঁধারে দেওয়াল ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে পোস্টারিং করায় জনমনে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
খুলনায় ১৫ আগস্টকে ঘিরে ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ। শহরের খালিশপুর থেকে শুরু করে ফুলবাড়িগেট এলাকার বিভিন্ন স্থানে দলটির পক্ষ থেকে দেওয়াল ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে পোস্টারিং করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এটি জনমনে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে তারা বিষয়টি তদন্ত করছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ৯ আগস্ট দিবাগত রাতে খালিশপুর বানৌজা তিতুমীর মেইন গেটের পশ্চিম দিকে এবং আশেপাশের এলাকায় আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পোস্টার লাগানো হয়। পোস্টারিংয়ের খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা তা ছিঁড়ে ফেলে।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নিকটবর্তী সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, এবং তথ্য মেললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, রাতের আঁধারে বাইরের লোকজন এনে এসব পোস্টার লাগানো হয়েছে। এর পেছনে বড় অঙ্কের অর্থায়ন করছে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত কিছু চক্র। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম মাহাবুব ব্রাদার্সের মালিক মাহাবুবুর রহমান, যিনি দলীয় ছত্রছায়ায় ঠিকাদারি কাজের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই অর্থ থেকেই পোস্টার ছাপানো, লাগানো এবং অরাজকতা তৈরির জন্য টাকা লেনদেন করা হচ্ছে।
খালিশপুরের বাসিন্দা হানিফ শিকদার বলেন, “পোস্টার লাগানোর পর স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে তা ছিঁড়ে ফেলেছে। গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সাহস করে জনসমক্ষে আসতে পারেনি, তাই তারা চোরের মতো রাতে পোস্টার লাগাচ্ছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আন্দোলনে নিরীহ মানুষ হত্যার দায় এড়াতে পারবে না আওয়ামী লীগ।”
খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাজাহারুল ইসলাম রাসেল বলেন, “রাতের আঁধারে পোস্টারিং করে আওয়ামী লীগ জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে। এটি দেশের আইন, গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক সহনশীলতার জন্য হুমকি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ থাকলে এ সাহস তারা পেত না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা জেলা শাখার সাবেক সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরেও নিষিদ্ধ সংগঠনের এ ধরনের কর্মকাণ্ড উদ্বেগজনক। খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে অবনতির দিকে, তা এই ঘটনার মাধ্যমেই স্পষ্ট।” তিনি দাবি করেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও পোস্টারিংয়ের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি বর্তমানে একটি মিটিংয়ে আছেন এবং পরে মন্তব্য করবেন।