কন্নড় সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ও কেজিএফ ফ্র্যাঞ্চাইজির পরিচিত মুখ ম্যাঙ্গালুরু দিনেশ আর নেই। সোমবার সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভারতীয় সিনেমা জগত আবারও হারাল এক গুণী শিল্পী। কন্নড় চলচ্চিত্রের বহুল পরিচিত অভিনেতা ম্যাঙ্গালুরু দিনেশ আর নেই। স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে কুন্দাপুরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তার মৃত্যুতে ভক্ত-শুভানুধ্যায়ীরা গভীর শোক প্রকাশ করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেমে এসেছে শোকের বন্যা।
দিনেশ মূলত থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয়জীবন শুরু করেন। পরে চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে যুক্ত হয়ে ধীরে ধীরে নিজের পরিচিতি তৈরি করেন। কেবল অভিনয় নয়, আর্ট ডিরেক্টর হিসেবেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত সফল। দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রায় ২০০টি চলচ্চিত্রে তিনি আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা পি শেশাদ্রি। তার ভাষায়, "দিনেশ ছিলেন অত্যন্ত হাসিখুশি ও রসিক মানুষ। সিনেমার বাইরে তিনি সবার সঙ্গে অল্প সময়েই মিশে যেতেন। তার মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।"
অভিনেতা হিসেবে দিনেশের ভিন্নধর্মী পরিচিতি তৈরি হয় কন্নড় সিনেমায়। ‘কেজিএফ’ ফ্র্যাঞ্চাইজির সোনা পাচারকারী শেট্টি চরিত্রে অভিনয় করে তিনি দর্শকের মনে জায়গা করে নেন। এ ছাড়াও ‘উলিদভারু খানদান্তে’, ‘কিরিক পার্টি’, ‘রিকি’, ‘অতিথি’, এবং ‘আ দিনাগালু’-সহ বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে তার অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল তার, যা তাকে অন্য অভিনেতাদের থেকে আলাদা করেছিল।
সিনেমার বাইরের জীবনে তিনি ছিলেন একদম সরল মানুষ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দিনেশ শহরের কোলাহল ছেড়ে কোদাচাদ্রিতে বসবাস শুরু করেন। সেখানে তিনি একটি ছোট খামার পরিচালনা করতেন। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। অসুস্থতার কারণেই শেষ পর্যন্ত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই তার জীবনাবসান ঘটে।
তার মৃত্যুতে শুধু চলচ্চিত্রাঙ্গন নয়, অসংখ্য ভক্ত ও সহকর্মীর মনে শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সহকর্মীরা বলছেন, দিনেশ শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক বন্ধুসুলভ ও আনন্দময় মানুষ, যার সান্নিধ্যে থাকলেই চারপাশ প্রফুল্ল হয়ে উঠত।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন। পরিবার, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তার আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। কন্নড় চলচ্চিত্র জগতে তার অবদান চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।