জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় ফরহাদ মজহার বলেন, রাজনৈতিক ঐক্যের অভাবেই দেশে অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ নেই। তরুণদের অবদানকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার না করার আহ্বান জানান তিনি।
লেখক ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গভীর বিভক্তি এবং পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের উন্নয়নমূলক সাফল্য থাকলেও রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় জনগণ এই সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে গ্রহণ করবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গত মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণশক্তি সভা’র আয়োজনে ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে বঞ্চনা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, “আমরা একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে, জনগণের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা বুঝতে হবে। অশালীন বিতর্ক বা বিভাজনমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে তা আন্দোলনের জন্য ক্ষতিকর হবে।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার মতো আইনি বৈধতা কি এই সরকারের আছে? শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া সংবিধানের অধীনে কোনো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না। প্রশাসন ও আমলাদের প্রভাবিত করে নির্বাচন পরিচালনার চেষ্টা জনগণ আর মেনে নেবে না। এভাবে জনগণকে প্রতারিত করা চলতে পারে না। গণসার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।”
বিএনপির উদ্দেশে ফরহাদ মজহার বলেন, “তরুণরাই আপনাদের মুক্তি এনে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেই দলকে ব্যবহার করবেন না। বরং তাদের ত্যাগ ও অবদানকে সম্মান জানিয়ে ঐক্য গড়ে তুলুন।”
গণশক্তি সভার সভাপতি সাংবাদিক সাদেক রহমানের সভাপতিত্বে ও প্রফেসর ড. দেওয়ান সাজ্জাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এটিএম জিয়াউল হাসান, গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, সাবেক সচিব কাসেম মাসুদ, কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বীর প্রতীক এবং লে. কর্নেল (অব.) ফেরদৌস আজিজ। বক্তারা সবাই রাজনৈতিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং তরুণ প্রজন্মের ত্যাগকে অবমূল্যায়ন না করার আহ্বান জানান।