আবীর হাসান
সাভার উপজেলা প্রতিনিধি
সাভারের কলমা এলাকায় ঘটে গেছে এক হৃদয়বিদারক ও অমানবিক ঘটনা। স্ত্রীর কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে প্রাণ ফিরে পাওয়া স্বামী মো. তারেক সুস্থ হয়ে জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায় ও অনলাইন জুয়ায়। স্ত্রী টুনিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে শেষমেশ বাড়ি থেকে বের করে দেন। বর্তমানে জামিনে মুক্ত তারেক এক ডিভোর্সি প্রেমিকার সঙ্গে বসবাস করছেন।
২০০৬ সালে কলেজছাত্রী টুনি ও মালয়েশিয়া প্রবাসী তারেকের বিয়ে হয়। এক বছর পর তাদের ছেলে আজমাইন দিব্য জন্ম নেয়। তবে ২০০৮ সালে তারেকের দুটি কিডনিই অচল হয়ে পড়ে। স্ত্রী টুনি সবকিছু বিক্রি করে তাকে ভারতে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান এবং ২০১৯ সালে নিজের একটি কিডনি দিয়ে তারেককে বাঁচান।
কিন্তু কিডনি পাওয়ার পর বদলে যান তারেক। স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং প্রেমিকার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। টুনি অভিযোগ করেন, তিনি নিজের আয়, স্বর্ণালংকার, এমনকি মায়ের পেনশনের টাকাও স্বামীর চিকিৎসায় খরচ করেছেন। সুস্থ হয়ে তারেক উল্টো তার ওপর নির্যাতন শুরু করেন, চাপ দেন বাড়ি নিজের নামে লিখে দেওয়ার।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে টুনি সাভার থানায় অভিযোগ করলে তারেক কিছুদিন কারাগারে থাকলেও বর্তমানে জামিনে আছেন। এরপর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।
টুনির আইনজীবী জানান, মানবদেহের অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইনে প্রতারণার অভিযোগসহ সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, এ ঘটনায় প্রতারণা, নির্যাতন ও বিশ্বাসভঙ্গের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। টুনির মতো কোনো নারী যেন এমন পরিস্থিতির শিকার না হন, সে জন্য কঠিন শাস্তি জরুরি।