সৈয়দ সাহেব পীর সাহেব — এক আলোকিত পথ প্রদর্শক 

Fuad Arko avatar   
Fuad Arko
****
'সৈয়দ আবুল ওলা (রহ.)' ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক সাধক ও সুফি পথপ্রদর্শক। তিনি  চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার সাহেবদীনগর গ্রামে অবস্থান করতেন। স্থানীয় অনুসারীদের মধ্যে তিনি "সৈয়দ সাহেব" বা "পীর সাহেব" নামে পরিচিত।তিনি শুধু একজন পীর বা সূফি ছিলেন না, ছিলেন আত্মিক জ্ঞানের এক উজ্জ্বল দীপশিখা—যাঁর আলো আজও বহু হৃদয়ে নীরবে দীপ্তি ছড়ায়।
 
 
জীবন ও আধ্যাত্মিক কার্যক্রম-
 
সৈয়দ সাহেব ছিলেন আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাসী, সৎ জীবনযাপনকারী ।তিনি বিশ্বাস করতেন, জীবনের প্রকৃত সাফল্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সঃ) এবং পাক পাঞ্জাতন ও আহলে বাইত-এর প্রতি আত্মসমর্পণে এবং আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার মধ্যেই নিহিত।
 
তাঁর শিক্ষাগুলি ছিল মূলত মানুষের ক্ল্ব-এর উন্নতি এবং আল্লাহর দিকে পূর্ণ মনোনিবেশ করা। তাঁর অন্যতম উক্তি : "মনি মুক্তার কদর বাদশা জানে, আর জানে তাহা জাওহারী।জানে বুলবুল ফুলের কদর, আর জানে তা শাহপরী।"দ্বারা তিনি মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং অনুপ্রেরণার উদ্রেক করতেন।সৈয়দ আবুল ওলা (রহ.) তার জীবনে এমন কিছু মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা আজও অনুসরণীয়। তিনি সর্বদা আহলে বাইত এর প্রতি পূর্ণাঙ্গ শ্রদ্ধা ও পরিশুদ্ধ হৃদয়ে  ভালোবাসতে বলেছেন এবং আত্মার উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করতে উপদেশ দিয়েছেন। 
 
 
পারিবারিক বংশ- তিনি ছিলেন আহলে বাইত বড়পীর কুতুবে রব্বানী গাউছুল আজম মাহবুবে ছোবহানী পীরানে পীর দস্তগীর হযরত সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর বংশধর। তাঁর পারিবারিক বংশক্রমে একের পর এক পীরে কামেল, আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক ও গাউছুল আজম-দের আবির্ভাব ঘটে, যাঁদের মধ্যে আছেন:বাগদাদ শরীফের কুতুবে আকতাব আবদাল গাউছুল আজম হযরত মাওলানা সৈয়দ নুর উদ্দীন (রহ.) এর পুত্র পীরে কামেল সৈয়দ রিয়াজ উদ্দীন (রহ.) উনার উত্তরসূরী মাওলানা সৈয়দ ইমাম উদ্দীন (রহ.) এর পুত্র সৈয়দ সিদ্দিক আহমদ (রহ.)এই পরম্পরা থেকে আগত এই ধারার এক উজ্জ্বল প্রতিনিধিত্বকারী সৈয়দ আবুল ওলা (রহ.) । তাঁর পুত্র সৈয়দ ফখর উদ্দীন।
 
 
বাংলায় আগমন ও স্থায়ী আবাস- উল্লেখযোগ্য যে, তাঁর পিতৃপুরুষ কুতুবে অকতাব আবদাল হযরত মাওলানা সৈয়দ নুর উদ্দীন (রহ.) এর সঙ্গে অন্যান্য আউলিয়া কেরামগণ ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বাগদাদ শরীফ হতে বাংলার জমিনে তাশরিফ । তাঁরা চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ইছাখালী ইউনিয়নের সাহেবদীনগর গ্রামে অবস্থান গ্রহণ করেন। 
 
 
ওফাত-২২শে শাবান ১৪২০ হিজরি সন, ১৭ই অগ্রহায়ণ ১৪১৬ বাংলা সন (১লা ডিসেম্বর ১৯৯৯) তারিখে ইন্তেকাল করেন। তাঁর শেষ যাত্রা চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ইছাখালী ইউনিয়নের সাহেবদীনগর গ্রামে সম্পন্ন হয়, যেখানে তাঁকে দাফন করা হয়। তাঁর মৃত্যুর পরও তাঁর আধ্যাত্মিক প্রভাব ও শিক্ষার আলো আজও অনেক মানুষের জীবনে রশ্মির মতো বিচ্ছুরিত হয়।
No comments found