শরীয়তপুরে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের একটি সিন্ডিকেটের অবরোধের কারণে এক অসুস্থ নবজাতকের মৃত্যুর পর এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউ মেট্রো ক্লিনিকের সামনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার বাসিন্দা নূর হোসেন সরদারের স্ত্রী রুমা বেগম প্রসববেদনায় নিউ মেট্রো ক্লিনিকে ভর্তি হন। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া নবজাতকটি জন্মের পর থেকেই ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুটিকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেয় স্বজনরা। ৫ হাজার টাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়।
তবে ঢাকার পথে রওনা হওয়ার পরই বাধার সম্মুখীন হন তারা। স্থানীয়ভাবে পরিচিত সবুজ দেওয়ান ও আবু তাহের দেওয়ান নামের দুই চালক গাড়িটি থামিয়ে দেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা অন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্সকে ঢাকায় যেতে দিতে রাজি ছিলেন না। একপর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্সের চালকের কাছ থেকে চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করেন এবং রোগীর স্বজনদেরও লাঞ্ছিত করেন। ফলে ৪০ মিনিট ধরে গাড়িটি আটকে থাকে এবং অক্সিজেন সাপোর্ট বিচ্ছিন্ন হয়ে নবজাতকের মৃত্যু হয়।
শিশুটির নানি সেফালী বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ঢাকায় নিতে পারলে আমার নাতি বেঁচে যেত। ওরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের আটকে দিয়েছে।“
অ্যাম্বুলেন্স চালক মোশারফ মিয়া জানান, তিনি রোগীর গুরুতর অবস্থা বোঝানোর চেষ্টা করলেও সিন্ডিকেট সদস্যরা ট্রিপ নিতে বাধা দেন এবং শারীরিকভাবে আঘাত করেন। এ ঘটনায় পালং মডেল থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
পালং মডেল থানা পুলিশের ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, “ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। এলাকাবাসী এমন অমানবিক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন।