close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

শ্যামনগরে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর: দ্রুত বিচার আইনের প্রয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
শ্যামনগরের কাশিমাড়ী গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার না হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কাশিমাড়ী গ্রামে সংঘটিত অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, মামলার পরও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, যা গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

গত ১২ আগস্ট রাতে কাশিমাড়ী গ্রামে হামলার ঘটনায় অভিযোগ করা হয়, প্রতিপক্ষরা সশস্ত্র অবস্থায় বাড়িঘরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। পরিবারের সদস্যদের মারধর করে রক্তাক্ত জখম করার পাশাপাশি তারা ঘরের মালামাল ভাঙচুর করে এবং নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে। অভিযোগে বলা হয়, প্রায় ১২ লাখ টাকার সম্পত্তি বিনষ্ট করা হয় এবং ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার সম্পত্তি লুট করা হয়।

এই ঘটনায় দ্রুত বিচার আইন ২০০২ (সংশোধনী ২০২৪)-এর অধীনে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলায় হাবিবুল্লাহ সরদারসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তবে মামলার পরও কোনও আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ।

অভিযোগকারীদের দাবি, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেছে এবং তারা প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে যে, মামলাটি টাকার বিনিময়ে ফাইনাল করে দেওয়া হবে। এ ধরনের বক্তব্য গ্রামে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আইনের সমান প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

মামলাকারী দাউদ আলী সরদার বলেন, “আমরা গরীব। আসামীরা প্রভাবশালী। তাই আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি, কিন্তু ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। আসামিরা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। পুলিশের ভূমিকায় আমরা হতাশ।”

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, “মামলার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে।” তবে এ পর্যন্ত কোনো আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সাতক্ষীরার সিনিয়র একজন আইনজীবী বলেন, “দ্রুত বিচার আইন অনুযায়ী, এই ধরনের মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার কথা। কিন্তু এখানে মামলা রুজুর পরও গ্রেপ্তার না হওয়া আইনি শৃঙ্খলার বড় প্রশ্ন। এর আগে ২০২৩ সালে শ্যামনগরের একই এলাকায় জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ গ্রেপ্তার না করায় আসামিরা প্রভাব বিস্তার করে। তখনও স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল।”

স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন, “আইন কি শুধু গরিবের জন্য? প্রভাবশালীদের জন্য কি আলাদা আইন আছে?” এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ততা শুধু আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, বরং এলাকায় অপরাধীদের উৎসাহিত করছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

No comments found