শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর ইউনিয়নের রামজীবনপুর কেয়াতলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ মোট ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, শ্যামনগর উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের মোহাম্মদ সোহেল রেজা ফরেজ বাদী হয়ে পুরাতন সাতক্ষীরার আব্বাস আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলামসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলা (জিআর-২৪২/২৫ শ্যামঃ) দায়ের করেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী শাহাজান ও তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে কেয়াতলার বিরোধপূর্ণ ১৬ বিঘা জমি দখলে রেখেছিল। মোহাম্মদ সোহেল রেজা ফরেজের দাবি, তার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলেও জমিটি প্রভাব খাটিয়ে দখল করা হয়েছিল। তবে উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী গত বছর ৫ আগস্টের পর সোহেল রেজা তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জমি দখল করেন।
শনিবার, ২ আগস্ট, বিকেল ৬টার দিকে শাহাজান বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে জমি দখল করতে আসে। এ সময় তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। শাহাজানের সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসীরা গুলি চালালে রামজীবনপুর গ্রামের আব্দুল মালেক গাজী (৫০), আরিফুল ইসলাম (১৫), আমিনুল ইসলাম (২৮), কেয়াতলা গ্রামের আবু সাঈদ (১৫) ও আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৫) গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও, লোহার রড ও লাঠির আঘাতে আরও পাঁচজন আহত হন।
হামলা শেষে পুলিশ আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আমানুল্লাহ ইমন, মারুফ হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করার পর সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৫ এর বিচারক রাফিয়া সুলতানার কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া হয়। তারা স্বীকারোক্তিতে জানান যে, শাজাহান কবীর তাদেরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবীর মোল্লা বলেন, মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ খায়রুল কবীর আনাম জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের জবানবন্দি শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই সংঘর্ষের ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে একটি বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপ এবং আদালতের কার্যক্রমের মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনা সমাধান করা জরুরি।