২০১৫ সালে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানায় এক ভয়াবহ, হৃদয়বিদারক এবং অমানবিক ঘটনা ঘটেছিল যা মানবতার মুখে কালিমা লেপন করেছে। বিএনপির একজন নেতাকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়ে, পুলিশ প্রশাসন একজন নিরীহ, অসহায়, এবং মাত্র এগারো মাস বয়সী শিশুকে আটক করে উনিশ ঘণ্টা থানার হাজতে আটকে রেখেছিল। কল্পনা করুন, একটি ছোট্ট শিশু, যার কোনো অপরাধ নেই, যে কথাও বলতে পারে না, সে কিভাবে উনিশ ঘণ্টা একটি অন্ধকার, ভয়ংকর হাজতের মধ্যে কাটিয়েছে! এই ঘটনাটি শিশুটির পরিবারের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক, মর্মান্তিক এবং অসহনীয় ছিল। একটি কচি জীবনের প্রতি এই অমানবিক আচরণ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং আমাদের সমাজের নৈতিক পতনের প্রমাণ। এই ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং একটি বিপজ্জনক সংকেত বহন করে। এটা আমাদের বিবেককে ঝাঁকুনি দিয়ে প্রশ্ন করে, আমরা কি ধরনের সমাজ গড়ে তুলছি যেখানে নিরীহ শিশুরাও নিরাপদ নয়?
যারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করছেন, তাদের জন্য এই ঘটনাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। সাবধান! ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আওয়ামী লীগকে যারা রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত করেছেন, তাদের পরিণতি কি হয়েছে। এই ইতিহাস আমাদের জন্য অনেক শিক্ষা বহন করে। আমাদের অতীতের ঘটনাগুলি বিশ্লেষণ করে বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রথমত, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পুনর্বাসিত করেছিলেন, তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরিণাম কি হয়েছিল? তিনি নিজেই এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন। এই ঘটনা আমাদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা – আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত করার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক ময়দানে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছিল। আজ জাতীয় পার্টির অবস্থা কি? তাদের অস্তিত্ব আজ সংকটে। এক সময়ের প্রভাবশালী এই রাজনৈতিক দল আজ প্রায় অস্তিত্বহীন। এই ঘটনা আমাদের জন্য আরেকটি সতর্কবার্তা।
তৃতীয়ত, ২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেনের সময় সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হতে সাহায্য করেছিল। এর পরিণামে কি হয়েছিল? পিলখানায় এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এই ঘটনা আমাদের জাতির ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই তিনটি ঘটনা থেকে আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারি যে, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত করার ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।
